রামুর বৃহৎ গর্জনিয়া বাজারের পশুর হাট হঠাৎ বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। গতকাল সাপ্তাহিক পশুর হাট আকস্মিক বন্ধ করে দেয়। এতে কোনো পশু বিক্রির জন্য বাজারে উঠাতে পারেনি খামারি ও ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন জানিয়েছে, উচ্চ আদালতের একটি রিট পিটিশন কেন্দ্রিক জটিলতায় বাজারটির কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে বাজার শুরু হওয়ার আগেই বাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি তহসিলদারের পক্ষ থেকে পশু না তোলার জন্য মাইকিং করে নিষেধ করা হয়। হঠাৎ বাজারটি বন্ধ করে দেয়ায় কোরবানি উপলক্ষে বিক্রির জন্য রাখা গরু ও অন্যান্য পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে প্রান্তিক খামারি, ব্যবসায়ীরা। একইভাবে কাঙ্ক্ষিত পশু কিনতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়েছে ক্রেতারাও। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রামুর অন্যতম শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত গর্জনিয়ার পশুর হাট এলাকা। এ বাজারের গুরুত্ব বেশ। চলতি ২০২৫ অর্থবছরে রামুর গর্জনিয়া বাজারের ইজারা মূল্য এক লাফে ১০ গুণ বেড়ে ২৬ কোটিতে দাঁড়ায়। যা পুরো দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে আইনি জটিলতায় উক্ত বাজারের ইজারা স্থগিত হলে প্রশাসন খাস কালেকশনের মাধ্যমে হাসিল আদায় করছে। দীর্ঘদিন যাবৎ গরুর খামার করে আসা স্থানীয় তিতার পাড়া গ্রামের মো. বেলাল উদ্দিন জানান, কোরবানের ঈদকে সামনে রেখে কিছুটা লাভের আশায় ব্যবসায়ীকভাবে গরু পালন করে আসছে। অনেক খামারি ঋণ নিয়ে গরু পালন করছে। এসব খামারে বিক্রি উপযোগী পশু রয়েছে দুই হাজারেও বেশি। গরু বিক্রি করেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে তাদেরকে। কিন্তু আকষ্মিক গর্জনিয়া বাজার বন্ধ করার কারণে বিপাকে পড়েছে খামারিরা। এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে খামারিদের পথে বসা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকবে না বলে জানান। গর্জনিয়া বাজার কমিটির সভাপতি এরশাদ উল্লাহ জানান, সামপ্রতিক সময়ে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু প্রবেশের বিষয়টি স্পষ্ট। এছাড়াও প্রতি হাটে ৬ শত এর অধিক গৃহ পালিত দেশীয় জাতের গরু বাজারে বিকিকিনি হয়। এছাড়াও অসংখ্য খামারি ব্যবসায়ীকভাবে গরু পালন করছে। এ অবস্থায় গর্জনিয়া গরুর বাজার বন্ধ করে দেয়া হলে দেশি গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সাথে সরকারের বড় ধরনের রাজস্ব বেহাত হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, আইনি জটিলতার কারণে সাময়িকভাবে গর্জনিয়া বাজারের পশুর হাটের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।