তাওহিদ হৃদয় এখন বাংলাদেশ দলের টি–টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ফরমেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তারপরও বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিবেচনায় এখনও তিনি যথেষ্টই নবীন। মোটে তো দেড় বছরের ক্যারিয়ার। কিছু ঘাটতি থাকাও তাই স্বাভাবিক। যেমন, অফ সাইডে তার ব্যাটিংয়ে উন্নতির অবকাশ দেখেন অনেকেই। তবে হৃদয় নিজে মনে করেন না, অফ সাইডে কোনো ঘাটতি তার আছে। গত বছরের মার্চে বাংলাদেশের হয়ে পথচলা শুরু হৃদয়ের। ওয়ানডে, টি–টোয়েন্টি দলে তিনি একরকম অপরিহার্য হয়ে উঠেছেন দ্রুতই। অভিষেকের পর থেকে বিশ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি রান করতে পারেননি কেউ। ওয়ানডেতে তার চেয়ে বেশি রান শুধু নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত তার ৮৪৮ রানের মধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি এসেছে অন সাইডে। টি–টোয়েন্টিতে ৬৮৪ রানের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি রান তিনি করেছেন উইকেটের এই পাশ দিয়ে। অন সাইড যে তার শক্তির জায়গা এবং এই দিকটাই তার ব্যাটিংয়ে প্রাধান্য পায়, সেটি নিয়ে সংশয় নেই একটুও। সামনে এবার আরেকটি সাদা বলের সিরিজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে খেলতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে স্কোয়াডের প্রথম ভাগের সদস্যরা। বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন হৃদয়। অফ সাইডে ঘাটতির প্রসঙ্গে তিনি বললেন, তার কাছে রান করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। ‘আমার তো মনে হয় না, অফ সাইডে ঘাটতি আছে। আপনার যদি মনে হয়, তাহলে হয়তো কাজ করে দেখতে হবে। আমার কাছে অমন মনে হয় না যে, ঘাটতি আছে। অন্যান্য দেশের ক্রিকেটাররা যখন এক পাশ দিয়ে রান করে, তখন ঘাটতি থাকে না। তখন ভালো শটস খেলে। আমরা যদি এক পাশ দিয়ে রান করি, তাহলে আমাদের ভেতরে ঘাটতি থাকে।’ ‘আমি মনে করি, রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। রান না করতে পারলে তখন বলবেন, রান হচ্ছে না। তাই আমি মনে করি, ঘাটতি চিন্তা না করে যেদিক দিয়ে রান আসবে… রানের খেলা, রান আসাটা গুরুত্বপূর্ণ।’ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকে চার–পাঁচ নম্বরে বেশিরভাগ ম্যাচ খেলেছেন হৃদয়। তবে গত বছর বিশ্বকাপে বেশ কিছু ম্যাচে সাত নম্বরে দেখা যায় তাকে। এরপর আবার নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলংকার বিপক্ষে সবশেষ দুই সিরিজে চার–পাঁচ নম্বরে ফেরানো হয় ২৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানকে। চার–পাঁচ নম্বরে যতটা সফল হৃদয়, এর নিচে নেমে ঠিক ততটা নন। তবু ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনে আপত্তি নেই তার। ‘এটি (ব্যাটিং অর্ডার) নিয়ে আমি আগেও অনেক বলেছি। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। দলের কী চাহিদা, দলের ভালোর জন্য যে সিদ্ধান্ত বা পরিস্থিতি কী চায়, সব কিছু মিলিয়েই ব্যাটিং অর্ডার ঠিক হয়।’ শারজাহতে আগামী বুধবার শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। এই মাঠেই সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে আফগানিস্তান। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক লড়াইয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই জয়ী তারা। তাই সামনের চ্যালেঞ্জটা মোটেও সহজ হবে না বাংলাদেশের। হৃদয় বললেন, সেই চ্যালেঞ্জটাকে আলিঙ্গন করতে প্রস্তুত।
‘আফগানিস্তানের বোলিং বিভাগ বিশেষ করে স্পিনাররা সবসময়ই ওদের শক্তির জায়গা। এটা আমরা সবাই জানি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিটা দলই শক্তিশালী। প্রতিটা দেশে তাদের সেরা ক্রিকেটাররাই খেলে। এগুলো নিয়ে বেশি চিন্তার কিছু নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করতে হলে এই চ্যালেঞ্জটা নিতেই হবে। প্রতিপক্ষে কারা আছে, তাদের নিয়ে আমরা পরিকল্পনা করব। সেভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করব।’