তারুণ্যের আইডিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ক্বণন শুদ্ধতম আবৃত্তি অঙ্গন মঞ্চায়ন করলো বৃন্দ আবৃত্তি প্রযোজনা ‘রাজপথে আঁকা কবিতায় দ্রোহের জলোচ্ছ্বাস’। ক্বণন’র এই কাব্যময় ও সুরময় প্রযোজনা ঘাস, লতাপাতা, ফুল, কোমল প্রেম কিংবা রোমাঞ্চকর গল্পের কোনো আখ্যান ছিল না। এই প্রযোজনা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সবাক চিত্র যা সুরে, ছন্দে ও শব্দ ঝংকারে বাঙ্ময় হয়ে উঠেছিল। ক্বণন’র আবৃত্তি শিল্পীদের উচ্চারিত কবিতাগুলোতে জুলাই বিপ্লবের চিত্র, বারুদের গন্ধ, বন্দুকের ঠাস ঠাস শব্দ, রক্তের লাল রঙে আঁকা রাজপথ উঠে এসেছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম এর নির্বাচিত ইউনিক আইডিয়া ক্বণন শুদ্ধতম আবৃত্তি অঙ্গনের গ্রন্থনা, নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় মঞ্চায়িত হয় এই বৃন্দ প্রযোজনা। ক্বণন সভাপতি আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক মোসতাক খন্দকারের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে কথামালা পর্বে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী রওশন ইসলাম, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত’র মা মোসাম্মাৎ কোহিনূর আক্তার এবং জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ দিদারুল আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সমন্বয়ক সাফায়েত হোসেন। ক্বণন সভাপতি আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক মোসতাক খন্দকারের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় মঞ্চায়িত বৃন্দপ্রযোজনায় অংশগ্রহণ করে ক্বণন’র আবৃত্তি শিল্পী শরীফ মাহমুদ, শুভ্রা চক্রবর্তী, সুস্মিতা চৌধুরী, ইব্রাহীম মাহমুদ, মুনয়িম আসরা, শাহ মো. রাইয়ান, হামিদ হোসেন, মেহজাবিন রুশনী, ওয়ারদাতুল জান্নাহ নওশিন, মেহজাবীনুর রশিদ সামিহা ও কানিজ ফাতেমা নূরী। চব্বিশের উত্তাল দিনগুলোতে কবিরা রাজপথের খোলা পৃষ্ঠায় যে কবিতা এঁকেছিল, রাজপথে আঁকা কবিতায় দ্রোহের যে জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছিল ক্বণন’র আবৃত্তি শিল্পীরা স্বর ও সুরের মুর্ছনায় তাকে জীবন্ত করে তোলে। এই বৃন্দ প্রযোজনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত’র মায়ের কথামালাকে অন্তর্ভুক্ত করা ছিল সমগ্র পরিবেশনার অত্যন্ত মর্মস্পর্শী অংশ।
অনুষ্ঠানের অতিথিগণ অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা জানান দেয় যে, আমরা আমাদের অনেক জাতীয় গৌরবগাথাকে সাংস্কৃতিক চর্চায় ধারণ করতে পারিনি। প্রজন্ম পরম্পরায় সাংস্কৃতিক সেতুর মাধ্যমে এ দেশের বিশাল তারুণ্যের কাছে জাতীয় ইতিহাসের মণিমুক্তাকে পৌঁছে দিতে পারিনি। এর ফলে তারুণ্যের অনেক মহৎ অর্জন বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে। ওই উপলব্ধি থেকে বলা যায় ক্বণন’র এই প্রয়াস দারুণ প্রশংসনীয়। জুলাই বিপ্লবের জ্বলজ্বলে স্মৃতিকে এই বৃন্দ প্রযোজনায় ধারণ করা হয়েছে। যার ফলে কষ্টার্জিত বিজয়ের স্মৃতিগুলো মলিন হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।