কুড়েঘর ভেঙে নতুন পাকা ভবন হচ্ছে। নির্মাণাধীন পাকা বসতঘরের ছাদ ঢালাই উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি থেকে দুই মেয়ে ও তার বোনরা বেড়াতে এসেছিলেন। ঘরজুড়ে ছিল নতুন ঘর নির্মাণের আনন্দ–উচ্ছ্বাস। কিন্তু সে ঘরেই লাশ হয়ে ফিরল পরিবারের কর্তা। এতে উচ্ছ্বাস–আনন্দ নিমিষেই রূপ নিল বিষাদে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ক্ষেত্রবাজারের কাছে।
নিহত ব্যক্তির নাম সন্তোষ কুমার শীল (৬৫)। তিনি একই এলাকার ক্ষেত্র মহাজন বাড়ির খগেন্দ্র লাল শীলের ছেলে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে সৎকার করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম মেজ জানান, মঙ্গলবার দিনগত রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। বাজারের একশো গজের মধ্যেই তার বাড়ি। রাত ১১টার দিকে মুঠোফোনে স্ত্রীকে বাড়ি ফেরার কথাও বলেছিলেন। এরপর সাড়ে ১১টা থেকে তাকে আর মুঠোফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রাত ১টার দিকে বাড়িতে ফেরার পথে বিলের ধারে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। সবাই ভেবেছিল হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু পরে দেখা গেল, তার পিঠের উপরে ঘাড়ের কাছে গভীর ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। তাকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, নিহত সন্তোষ কুমার শীলের নির্মাণাধীন পাকা বসতঘরের সামনে তার নিথর দেহ ঘিরে বিলাপ করে কাঁদছেন স্বজনরা। তাকে হত্যার ঘটনাস্থলে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। তাকে কেন হত্যা করা হয়েছে কিংবা কারা হত্যা করতে পারে সেই ব্যাপারে কিছুই জানাতে পারেনি কেউই। তার পরিবারে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক প্রবাসী ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের ছোট ভাই অধীর শীল জানান, আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। আশেপাশের সবার সঙ্গেই ছিল ভালো সম্পর্ক। স্ত্রী স্বপ্না শীল জানান, রাত ১১টার দিকে বলেছিল, বাজার করে বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু ফিরলেন লাশ হয়ে। তাকে কারা ও কেন খুন করল বুঝে উঠতে পারছি না।
এই ব্যাপারে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান জানান, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।