রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নে খাবারের খোঁজে বন থেকে লোকালয়ে নেমে এসেছে বন্য হাতির পাল। হাতিগুলোকে বনে ফেরাতে ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করছেন বন বিভাগের কর্মীরা।
সরফভাটা ইউনিয়নের মীরেরখীল এলাকার ইউপি সদস্য মোহাম্মদ দিলদার জানান, মীরেরখীল বাজারে সম্প্রতি রাতে বন্য হাতির চলাফেরা দেখা গেছে। যা বাজারের সিসিটিভি ফুটেজেও ধরা পড়েছে। আগের দিন রাতেও একাধিক বন্য হাতির পাল লোকালয়ে এসেছিলো। এসময় এক কৃষকের দুটি গরু মেরে ফেলে। এভাবে গেল কিছুদিন ধরে মীরেরখীলের বিভিন্ন এলাকায় হাতির পাল হানা দিয়ে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি করছে। রাতের অন্ধকারে হাতির আনাগোনাতে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
এদিকে গেল শনিবার উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ত্রিপুরা সুন্দরী এলাকায় হানা দেয় বন্য হাতির পাল। এসময় বন্য হাতির পাল স্থানীয় মো. ওসমানের গোয়াল ঘর ভেঙে ফেললে একটি গাভি মারা যায় এবং আরও পাঁচটি গবাদি পশু আহত হয়। এরআগে ওইদিন রাত দেড়টার দিকে ত্রিপুরা সুন্দরী গ্রামে হানা দেয় বন্য হাতির পালটি। শস্যক্ষেত থেকে শুরু করে গৃহস্থ বাড়িতে রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। জানা যায়, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ি এলাকায় বন্য হাতির পালের লোকালয়ে হানা দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গেল কয়েক বছর ধরে প্রায় প্রতি রাতেই দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার চার ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লোকালয়ে হাতি আসায় নির্ঘুম রাত কাটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। হাতির আক্রমণে গেল পাঁচ বছরে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন, নষ্ট হয়েছে ফসল।
সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গত পাঁচ বছরে অনেকের মৃত্যুর পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও ফসলাদির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লোকালয়ে বেশ কয়েকটি হাতিও মারা গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিলেও হাতি আসা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব বাড়ছে।
বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান বলেন, পটিয়া হয়ে বোয়ালখালী, সরফভাটা, শিলক, পদুয়া, রাইখালী কাপ্তাই হয়ে শিলছড়ি পর্যন্ত হাতির একটা করিডোর আছে। এই পথে হাতি আদিকাল থেকেই চলে আসছে। তবে আগের তুলনায় হাতির সংখ্যাও এখন বেড়েছে। অন্তত ৪০টি হাতি এখন এই পথে চলাচল করে। তিনি বলেন, হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব কমাতে বিভিন্ন সভা–সেমিনার, মাইকিংসহ নানা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে হাতির আক্রমণে ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ এবং মারা যাওয়া পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ম অনুসারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তবে হাতি আসলে আতংকিত না হয়ে তাকে ফিরে যেতে কৌশলে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং আমাদের জানাতে হবে।