রাঙ্গুনিয়ায় বাড়ছে ভুট্টা আবাদ। অন্যান্য ফসলের চেয়ে রোগবালাই ও পরিশ্রম কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় দিনদিন আবাদ বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তাই ভুট্টার ভালো ফলনে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। যেখানে গেল দুই বছর ধরে হয়েছিল ৫৪ হেক্টর জমিতে। এ বছর প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে ১০টি। একটি প্রদর্শনী ৪০ শতক করে মোট ১.১৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়। তাদের সরকারিভাবে বীজ সার দেয়া হয়েছে।
কৃষকরা জানান, ডিসেম্বরের দিকে বীজ বপণ করা হয়। এরপর পরিমাণমত সার দিলে রোপণের ৭–১০ দিনের মধ্যে বীজ অঙ্কুরিত হয়। এরপর আগাছা নিড়ানি ও সেচ দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। ফলন আসতে সাড়ে ৪–৫ মাস সময় লাগে। বর্তমানে তাদের আবাদে মোচা আসা শুরু করেছে। এপ্রিলের শেষের দিকে ফলন আসবে।
উপজেলা মরিয়মনগর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের কৃষক নূর উদ্দিন। এবার দেড় হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন তিনি। কাটাখালীর পিচঢালা সড়কের পাশ ঘেঁষে দিগন্ত বিস্তৃত তার ভুট্টা আবাদ। গুমাইবিলের ধান আবাদের পাশাপাশি নুর উদ্দিন কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার ভুট্টা আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, তার হেক্টর প্রতি ৫–৬ টন ফলন আসতে পারে। হেক্টর প্রতি ৭০–৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি কেজি ৩০ টাকা ধরে বিক্রি হলে দেড় থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে তার।
উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, ভুট্টা আবাদের ক্ষেত্রে প্রথমে বীজ বপনের ১৫–২০ দিন থেকে শুরু করে ৮৫–৯০ দিন পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে চারবার সেচ দিতে হয়। ভুট্টার কিছু রোগ আসে। পাতা ঝলসানো, মোচা ও দানা পঁচা রোগ এবং কাণ্ড পঁচা রোগ। এসমস্ত রোগে আক্রান্ত হলে ছত্রাকনাশক দিতে হবে। কাটুই পোকা আক্রমণ করলে কীটনাশক দিলে পোকা নির্মূল হবে। এভাবে কিছু সার আর আগাছা নির্মূল করতে হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে অল্প পরিশ্রমে খরচের দ্বিগুণ আয়ের সুযোগ রয়েছে ভুট্টায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, ভুট্টা চাষে প্রথমদিকে আগ্রহ দেখাননি কৃষকরা। তবে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে উৎসাহিত করে এবং প্রণোদনা–প্রদর্শনী দিয়ে প্রথমে আবাদে যুক্ত করানো হয়। গেল কয়েক বছর ধরে লাভ দেখে কৃষকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আবাদ করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে কৃষি অফিস তাদের সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।