প্রতি বছরের মতো এবারও রাঙ্গুনিয়ার ফসলি জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি অগ্রীম নগদ টাকা, বীজ দিয়ে সহযোগিতা দিয়ে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে তামাক চাষ করিয়েছেন। এতে বহু চাষি তামাক চাষে নেমে পড়েছেন। এভাবেই বছরের পর বছর রাঙ্গুনিয়ার ফসলি জমিতে চলছে তামাকের আগ্রাসন। অন্যদিকে প্রলোভনে হচ্ছে জমির সর্বনাশ, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন চাষি ও শ্রমিকরা।
সরেজমিনে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইছামতী ও কর্ণফুলী নদীর তীরে এমনকি সড়কের পাশে তামাক চাষ চলছে। এছাড়া উপজেলার পদুয়া, মজুমদারখীল, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, ইছাখালী কর্ণফুলীর চর, পারুয়া, মুরাদনগর পশ্চিম পাড়া, ঘাটচেক, রাজানগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে তামাকের আবাদ হয়েছে। কৃষকরা প্রতি বছরের ন্যায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোসহ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধির কাছ থেকে বীজ, সার ও নগদ টাকা নিয়ে তামাকের চাষ করেছেন। অনেক স্থানে তামাক পাতা শুকাতে স্থাপন করা হয়েছে বিশালাকার চুলা। সেখানে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা।
তামাক চাষিরা জানান, বিভিন্ন কোম্পানির লোকজন চাষাবাদের জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার দেন। শীতকালে তারা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে রোপণ করেন। এরপর পরিপুষ্ট হতে তিন মাস সময় লাগে। সবমিলিয়ে ৬–৮ মাসের মধ্যে পাতা সংগ্রহের উপযুক্ত হলে তা চুলায় শুকিয়ে ফেলা হয়। এরপর মাঠ থেকেই কোম্পানির লোকজন এসে নগদ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যান। প্রকারভেদে কেজি ২০০–২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় তামাক। তামাক চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। অল্প খরচে কম সময়ে এই ফসল ঘরে তোলা যায়। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা জেনেও বেশি লাভের আশায় তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় তামাক চাষ অনেকটা কমে এসেছে। কৃষকদের এর ক্ষতিকারক দিক বুঝিয়ে তাদের এই চাষের প্রতি নিরুৎসাহিত করে আসছি আমরা। এরপরও টোব্যাকো কোম্পানিগুলো বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে চাষিদের তামাক চাষে উৎসাহিত করছে। উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা কিংবা চরে তামাক চাষ হয়েছে। এতে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে, পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাষিদের এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে ভবিষ্যতে যেনো আর তামাক চাষ না হয়, সেই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।