রাঙ্গুনিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ১২:৫৯ অপরাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় চোর সন্দেহ মো. রুবেল (২৭) নামে এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেছে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে লালানগর ইউনিয়নের ইসলামিয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুবেল চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম এলাকার মোহাম্মদ আলীর পুত্র। তার বাড়ি চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম হলেও দীর্ঘদিন যাবত সে লালানগর ৫নং ওয়ার্ডে তার শ্বশুর বাড়িতে থাকেন বলে জানা যায়। পেশায় সে একজন অটোরিকশা চালক বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত রুবেল রাত আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী’র বড় ভাইয়ের সিএনজি-অটোরিক্সায় জ্বালানী গ্যাস নেয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। গ্যাস নিয়ে আসার পথে লালানগর বন্দেরাজাপাড়া এলাকায় এলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে গতিরোধ করে। তার বিরুদ্ধে গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে ধামাইরহাট বাজারে কামরুলের মোবাইলের দোকানে চুরি করে ২লক্ষ টাকা ও ৩টা মোবাইল নিয়ে আসে মর্মে অভিযোগ করেন।

এসময় রুবেল ঘটনার ব্যাপারে অস্বীকার করলে তাকে লালানগর ইউনিয়ন বিএনপি পার্টি অফিসে নিয়ে যায় এবং ব্যাপক মারধর করেন। একপর্যায়ে দু’জনের নাম স্বীকার করলে তাদেরও ধরে এনে মারধর করে তারা। মারধরের একপর্যায়ে রুবেল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে ওই অবস্থায় রেখে চলে আসে। এদিকে ভোরের দিকে রুবেলের স্ত্রী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তার হাত-পা বাধা অবস্থায় রুবেলকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই জসিম বলেন, “রুবেলকে আমি গ্যাস নিতে পাঠিয়েছিলাম। আসার পথে মরিয়মনগর ডিসি সড়কের শান্তিনিকেতন এলাকা থেকে কয়েকজন গাড়িতে ওঠে। তারা বন্দেরাজাপাড়া এলাকায় এলে গাড়িতে থাকা কয়েকজনসহ স্থানীয়রা মিলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত দীর্ঘ মারধরে তার মৃত্যু হয়েছে।”
তিনি জানান, নিহত রুবেলের প্রকৃত বাড়ি ফেরিঘাট, মা-বাবা নেই। ছোট থেকেই বনগ্রামে পালক সন্তান হিসেবে বড় হয়েছিলো। গত ৯ বছর আগে তার বোনকে বিয়ে করে সেখানেই থাকছেন। সংসারে ৬ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে তার।
এদিকে তার ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, মৃত মো. রুবেল ইতিপূর্বেও একাধিক চুরির সাথে জড়িত ছিলো। গত দুইমাস আগেও চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলো। এরপর তার স্ত্রী ও স্ত্রীর বড়ভাই মো. জসিম মুচলেকা ও জরিমানা দিয়ে স্থানীয় সালিশ থেকে নিয়ে গিয়েছিলো।

এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যবসায়ীদের জন্য মেয়রের দরজা সবসময় খোলা
পরবর্তী নিবন্ধসারাদেশে ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন