চতুর্থ ধাপের দেশের ৫৬টি পৌরসভার মধ্যে পার্বত্য রাঙামাটি পৌরসভার নির্বাচন আজ রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএমে) ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
রাঙামাটি শহরের ৩১টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কেন্দ্রগুলোতে সকালে ভোটারদের সংখ্যা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে উৎসবমুখর পরিবেশে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছিল ভোটারদের দীর্ঘ সারি।
রাঙামাটির মেয়র পদে প্রার্থী রয়েছেন ৫ জন। তাদের মধ্যে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আকবর হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন।
এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াও মেয়র পদে আরো লড়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অমর কুমার দে মোবাইল প্রতীকে, জাতীয় পার্টির প্রজেশ চাকমা লাঙ্গল প্রতীকে ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আব্দুল মান্নান রানা কোদাল প্রতীক নিয়ে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আকবর হোসেন চৌধুরী সকাল সাড়ে ৮টায় ভোট দিয়েছে আলফেসানী উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং বিএনপি প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন সকাল ৯টায় শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট দিয়েছেন।
এদিকে, ভোট প্রদানকালে মেয়র প্রার্থী আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, “জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী কারণ বিগত ৫টি বছর আমি রাঙামাটি পৌর এলাকার উন্নয়নে কোনো বৈষম্য দেখাইনি।”
অপরদিকে, বিএনপি প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, “এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন চলছে। কোনো অভিযোগ নাই। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।”
এদিকে, শহরের রাঙাপানি এলাকার যোগেন্দ্র দেওয়ান পাড়া ভোট কেন্দ্রে পাহাড়ি ভোটারদের লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো।
যোগেন্দ্র দেওযান পাড়া কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা সোনালী চাকমা বলেন, “এবার ইভিএম ভোট দিতে পেরে আমি খুব খুশী। অল্প সময়ের মধ্যে ভোট দিতে পেরেছি।”
অপরদিকে, শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকার সিনিয়র মাদ্রাসা ভোটে কেন্দ্রের নবীন ভোটার জয় বলেন, “আমি প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছি। আমি খুবই আনন্দিত।”
এদিকে, এবারের নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৯জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভার মোট ভোটার ৬২,৯১৩ জন। এর মধ্যে নারী ২৮৬৭১ ও পুরুষ ৩৪২৪২ জন।
অন্যদিকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃখলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি কেন্দ্রে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে, পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ, ৯জন আনসার সদস্য সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি পুলিশের ১৩টি মোবাইল টীম এবং ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাচনে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে।
এছাড়াও র্যাব ও বিজিবি’র সদস্যরাও পুরো শহরে টহল দিচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসন।