রাঙামাটির কাউখালীতে লোহার শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে আঘাত করে মা–মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের জামাই বিল্লাল হোসেনকে (৩৫) আটক করেছে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কাউখালী উপজেলার বেতনুনিয়া ইউনিয়নের কাঁশখালী গ্রামে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন এক সন্তানের জননী ফাতেমা আক্তার (২৬) ও তার বৃদ্ধ মা আয়েশা খাতুন (৬১)। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বেলাল হোসেন (৩৫) নিহত ফাতেমা আক্তারের স্বামী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের কাঁশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাইরা গ্রামের আনজু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেনের তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে বিল্লাল তার স্ত্রী ফাতেমাকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। তাদের সংসারে ২ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে মাস দুয়েক আগে কাঁশখালীতে মায়ের বাড়িতে চলে আসেন ফাতেমা।
২৯ জুলাই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে কাউখালী আসেন বেলাল। নিহত স্ত্রী ফাতেমা যেতে রাজি না হওয়ায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কাউখালী বাজারে কাজী অফিসে বিবাহবিচ্ছেদ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। ছাড়াছাড়ির পর কুমিল্লা ফিরে যান বেলাল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিল্লাল ফাতেমার সন্তান পার্শ্ববর্তী বাড়িতে গিয়ে ‘বাবা কই, বাবা কই’ ডাকাডাকি করলে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। পরে স্থানীয়রা এসে ঘরে ফাতেমা ও আয়েশাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।
নিহত ফাতেমার প্রতিবেশী রোকেয়া বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টি হওয়ায় এবং ঘরটি একটু দূরে থাকায় চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাইনি। তবে শিশুটির কান্না একবার শুনেছিলাম। তার একটু পরেই শিশুটি আমার ঘরে চলে আসে। ঘটনার সঙ্গে বিল্লাল জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন স্থানীয়রা।
এদিকে জোড়া খুনে অভিযুক্ত বেলাল হত্যার ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় কাউখালী–রাণীরহাট সড়কের বেতছড়ির পাইনবাগান এলাকায় স্থানীয়রা সন্দেহবশত তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব চন্দ্র কর জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বিল্লাল। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই বাদী হয়ে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।