রাঙামাটিতে শেষ বেলায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। রাঙামাটি শহরে একমাত্র পশুরহাট বসানো হয়েছে পৌর ট্রাক টার্মিনালে। এবার জেলা সদরসহ শহরের বাইরে জেলার অন্যান্য উপজেলায় মোট পশুরহাট বসেছে ২০টি। জেলায় সবচেয়ে বড় পশুরহাট বসেছে লংগদু উপজেলার মাইনিমুখ বাজারে। এসব তথ্য নিশ্চিত কেরেছেন জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ।
গতকাল শুক্রবার শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনালে অস্থায়ী গরুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রচুর পাহাড়ি গরু রয়েছে। তবে গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার প্রচুর গরুর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। দাম অন্যান্যবারের তুলনায় এবার বেশি। মাঝারী মানের পাহাড়ি গরু গত বছর দাম ছিল ৬০-৭০ হাজার টাকা, এবছর দাম হাঁকাচ্ছেন ৯০ থেকে ১ লক্ষ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতি গরুতে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।
কয়েকজন গরু বিক্রেতা জানান, পাহাড়ি গরুর চাহিদা এখন আরো বেড়েছে। এছাড়া, গো খাদ্যর দাম বৃদ্ধি, লালন পালনের খরচ বেড়ে যাওয়া এবার গরুর দাম একটু বেশি। শহরের কোরবানির পশুর হাটে সাইফুল উদ্দিন নামের এক ক্রেতা জানান, হাটে গরু আছে প্রচুর। দামও বাড়তি। গত বছর ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় যে ধরনের গরু পাওয়া গেছে, এবার প্রায় একই গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে লাখ টাকার উপর।
ব্যবসায়ী আবদুল গফুর জানান, গত দু’বছর ধরে গরু ব্যবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে। এবার অধিক মুনাফা পাওয়া না গেলেও লোকসানের আশঙ্কা নেই। আর এবছর মাঝারি আকারের গরুর দাম একটু বেশি। আমাদের কেনায় বেশি, তাই কিছুটা অধিক দামে গরু বিক্রয় করতে হচ্ছে।
আরেক ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, গত বছর রাঙামাটিতে গরু নিয়ে এসে অনেক টাকা লোকসান গেছে। এবার হয়তো কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পাবো। তবে বাজারে প্রচুর গরু আসছে অথচ সে অনুযায়ী ক্রেতা একদম কম। এবার কোরবানির হাটে ২০টি গরু লংগদুর মাহিল্যা এবং বাঘাইছড়ির আমতলী থেকে এনেছি। সবগুলো ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে লাভের আশা করছি। রাঙামাটি পৌর ট্রাক টার্মিনাল পশুরহাট ইজারাদার মো. রুহুল আমিন বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর ইজারা ভালো উঠছে। কারণ গতবছর করোনার ভয়ে লোকজন বাজারে আসেনি। এ বছর সবাই গরু কিনতে বাজারে আসছে। আজকে এবং শনিবার এখানে কোরবানির পশুরহাট ভালো জমবে। এদিকে, রাঙামাটি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বরুণ কুমার দত্ত জানান, এ বছর জেলায় ৩৪ হাজার ২২৮টি কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে ৩৮ হাজার ৬২৫টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ক্রেতারা যাতে নিরাপদে পশু কিনতে পারে সেজন্য ভেটেরিনারি টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের ১২টি ভেটেরিনারি টিম কাজ করছে।