বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলার লংগদু, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, রাঙামাটি সদর উপজেলার নিম্ন এলাকায় হ্রদ তীরবর্তী বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। পাশাপাশি ফসলের ক্ষতি বাড়ছে। জেলায় বেড়েছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা।
এদিকে, কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, ১৬টি জলকপাট দিয়ে ২ ফুট করে পানি ছাড়া হচ্ছে। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর আছে ১০৮.১৫ এমএসএল। স্বাভাবিকভাবে পানির স্তর থাকার কথা ১০৪.০ এমএসএল। এতে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার নিম্ন অঞ্চলের মানুষ এবং হ্রদ তীরবর্তী এলাকার মানুষ।
রাঙামাটি হ্রদতীরবর্তী শান্তি নগর এলাকার বাসিন্দা মো. মিন্টু বলেন, গত ২০ বছরও এমন পানি হয়নি। বাড়িতে কখনো পানি উঠেনি। এ বছর বৃষ্টি ও হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়িঘরে পানি উঠেছে। রান্নাবান্না সব বন্ধ। হোটেল থেকে কিনে এনে খাচ্ছি। রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি সদরের পানিবন্দি ৭৫০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। রাঙামাটি পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমার ওয়ার্ডের শান্তিনগর, রসুলপুর, সৈয়দনগর এলাকায় প্রায় ২৫০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এদের প্রত্যেককে পরিবার প্রতি চাল বিতরণ করা হয়েছে। ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবি মোহন চাকমা বলেন, পানিবন্দি এলাকায় ১৫০ পরিবারকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার জানান, উপজেলার ৭ নং ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডে পানি উঠেছে। এতে প্রায় ৩ হাজার পারিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রয়েছে।
এদিকে, বেশ কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে, পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া, ভাসান্যদম ইউনিয়নের ভাসান্যদম এলাকা ও গুলশাখালী ইউনিয়নের ডিপুরমুখ এলাকা এবং লংগদু সদর ইউনিয়নের তিনটিলা, মাইনী এলাকার গাঁথাছড়া বড়কলোনি, এফ আইডিসিসহ বিভিন্ন এলাকার হাজারো পরিবার। বেকায়দায় পড়েছে স্কুল মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্ররা, বিপাকে আছে গৃহপালিত পশু, গরু, ছাগল, হাস মুরগী পালনকারী খামারিরা। সংকট দেখা দিয়েছে খাবার পানিরও।
এর আগে লেকের পানির উচ্চতা বেড়ে ১০৭.৫৪ ফুট এমএসএল হওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছিলো কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেইট।