পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ৫ দিনের ভারী বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছেই। দুই জেলায় পাহাড় ধসে বসতবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন।
আমাদের রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, জেলার ১৯৭টি স্থানে ছোট–বড় ভাঙন ও পাহাড় ধসের কারণে মোট ৩৮১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বরকল উপজেলায় পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন একজন। তাকে উদ্ধারের অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, রাঙামাটির ১৪টি ব্রিজ–কালভার্ট, ১৬টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং জেলার ৬৮৩ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া রাঙামাটি–চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কসহ জেলার ৭৫টি স্থানে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে ৯টি স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১২৪টি ঘর ও ৫টি হাটবাজার পানিতে ডুবে আছে। জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন ও জুরাছড়ির চারটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে বন্ধ রয়েছে রাঙামাটি–বান্দরবান সড়ক পথে চলাচলের চন্দ্রঘোনা ফেরি। জেলায় সোমবার পর্যন্ত মোট ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১ হাজার ৭২৭ জন মানুষ।
এদিকে, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে জেলা শহরের মানিকছড়ি এলাকায় জাতীয় গ্রিডের ৩৩ কেভি ভোল্টের লাইনের উপর গাছ পড়ে রাঙামাটি শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ৫ ঘন্টা পর শহরে রাত ১০টায় বিদুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, জেলার পৌর শহরের শালবন, কলাবাগান,সবুজবাগ এলাকায় পাহাড় ধসে গেছে। তবে দিনের বেলায় হওয়ায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সকালে ভারী বর্ষণের কারণে আকস্মিকভাবে পাহাড়ের ধসের ঘটনা ঘটে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভা শালবনের বাসিন্দা জুলেখা বেগম জানান, ‘পাহাড় ভেঙে মাটি ঘরের ভেতরের ঢুকে গেছে । বৃষ্টি হলেই পাহাড় ভেঙে পানি ঘরে ভেতরে ঢুকে পরছে। বাড়ির ভেতরে অনেক মূল্যবান থাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে পারছি না। ’
সোমবার দুপুর ২ টার পর বিভিন্ন ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান। এসময় তিনি শালবন ও কুমিল্লা টিলা এলাকার ঝুঁকিপূর্ন স্থান থেকে সরে যাওয়ার জন্য বসবাসকারীদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান ,‘ সদরসহ পুরো জেলায় ১৩৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চাইবে না তাদের বাধ্য করা হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত এাণ মজুদ করা হয়েছে।