রাউজান উপজেলা বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের মারামারিতে উভয়পক্ষের ছয়জন আহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে পৌরসদর মুন্সিরঘাটা ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে। আহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সমর্থক বিএনপি নেতা শহিদুল আলম, কর্মী মোহাম্মদ আজম, মোহাম্মদ নাহিদ, মোহাম্মদ রিয়াদ ও নরুন নবী। অপরজন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সংসদ সদস্য গোলাম খোন্দকার সমর্থিত সদ্য ঘোষিত উপজেলা বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী। তাদের সবার হাতে জখম দেখা গেছে। জানা যায়, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সমর্থকগণ সদ্য ঘোষিত বিএনপির উপজেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় গোলাম আকবর খোন্দকার সমর্থিত নতুন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবু মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার উদ্দিন খানসহ বেশ কিছু নেতা উপজেলায় আসেন সদ্য যোগদান করা উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা জিসান বিন মজিদের সাথে মতবিনিময় করতে।
এই খবর পেয়ে গিয়াস কাদের সমর্থিত লোকজন উপজেলা চত্বরে সমবেত হয় ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। প্রতিপক্ষের লোকজন উপজেলা পরিষদ থেকে বের হয়ে এলে গিয়াস কাদেরের অনুসারীরা সম্মেলন না করে কিভাবে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে জানতে চান গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের কাছে। এমন পরিস্থিতিতে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। দুপক্ষের উত্তেজনার মাঝে শুরু হয় হাতাহাতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গতকাল সকাল থেকে পরিষদ চত্বরে চলছিল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মেলা। মেলায় সমবেত হয়েছিল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। বিএনপির মধ্যে এই মারামারির ঘটনায় আতংকিত মানুষ ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ এসে উভয় দলকে সেখান থেকে সরিয়ে দিলে গোলাম খোন্দকার সমর্থিতরা মিছিল নিয়ে মুন্সিরঘাটায় যান। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখছিলেন সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী। এসময় আবারও গিয়াস কাদের চৌধুরীর সমর্থকরা প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে সেখানে গেলে দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনার পর বিএনপির গিয়াস উদ্দিন কাদের সমর্থিতরা সংবাদ সম্মেলন করে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘোষিত কমিটি বাতিল করা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে তার দায় অন্যায়ভাবে কমিটি ঘোষণাকারীদের নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ মনজুরুল আলম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আবুজাফর চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব উল্লাহ মাস্টার, বিএনপি নেতা ফিরোজ আহম্মদ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা ছৈয়দ তৌহিদুল আকবর, পৌর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আনিসুজ্জামান সোহেল, সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আবুল বশর, মোজাহের আলম, রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল আলম, কাজী সরোয়ার মন্জু, মোহাম্মদ হারুন, উত্তর জেলা যুবদলের সাবের সুলতান কাজল, ইউছুপ তালুকদার, মোজাম্মেল হক, মোহাম্মদ হারুন, শেখ নাজিম উদ্দিন, শাহাজান শাকিল, ছৈয়দ মো. তৌহিদুল আলম, এনাম উল্লাহ, আবুল কাসেম রানা, মুছা মিয়া প্রমুখ।