দক্ষিণ রাউজানের যুবদল কর্মী আবদুল্লাহ মামুনকে গুলি করে হত্যার দুই দিনের মাথায় রাউজান সদর ইউনিয়নে আরো এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গত শনিবার রাতে বাগোয়ান ইউনিয়নে গুলি করে মারা হয়েছিল মামুনকে। গতকাল মঙ্গলবার খুনের শিকার হলেন যুবদল কর্মী মুহাম্মদ ইব্রাহিম (৩০)। নিহত ইব্রাহিম বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী এবং রাউজান সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমের ছেলে। এদিকে এই ঘটনায় মঈন উদ্দিন নামে অপর এক যুবক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুই সন্তানের জনক ইব্রাহিম মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে এসে গাজীপাড়া বাজারের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় হঠাৎ দুটি সিএনজি ওই পথে এসে একটি থেকে ইব্রাহিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এসময় তার মাথায় ও শরীর বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটে পড়েন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর খুনিরা দ্রুত টেক্সি নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপর ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ পৌঁছে সেখান থেকে দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলম বলেছেন, ইব্রাহিত বালু ও মাটির ব্যবসা করত। তার সাথে কারো বিরোধ ছিল না। কেন, কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা তিনি বলতে পারছেন না। পুত্রশোকে পাগলপ্রায় নিহতের মা বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, আমার ছেলে বাড়িতে ঘুম ছিল। আমি বাইরে গিয়েছিলাম একটি কাজে। এসে শুনি ছেলেকে কেউ একজন ফোন করে বাজারে নিয়ে গেছে। তবে কে ফোন করেছিল তা তিনি বলতে পারেননি।
নিহতের চাচা পরিচয়দানকারী স্থানীয় যুবদল নেতা আবদুল হালিম বলেন, তার ভাতিজার সাথে ঘটনার আগে তিনি দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। হঠাৎ খুনিরা টেঙি নিয়ে এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই গুলি ছোঁড়া শুরু করে। আমি পালিয়ে যেতে পারলেও তারা ইব্রাহিমকে কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, ইব্রাহিম এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। তাকে মারার কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকারীদের সনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।
কদলপুরে আরেক যুবকের পায়ে গুলি : গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাউজান সদর ইউনিয়নের যুবদল কর্মী মো. ইব্রাহিমকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটিয়ে যাওয়ার পথে কদলপুর ইউনিয়নে একটি বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে ঘাতকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ত্রাসীরা কদলপুরে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার বাড়ির আবুল কালামের ঘরে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা কালামের ছেলে মান্নানকে খুঁজতে থাকে। তাকে না পেয়ে তার ভাই অটো রিকশাচালক মো. নাঈমের পায়ে গুলি করে। স্থানীয়রা এসে গুরুতর আহত অবস্থায় নাইমকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। জানা যায়, মান্নানও গিয়াস কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।