রাউজান নোয়াপাড়া থেকে দুই ছাত্রদল নেতাকে অপহরণ করে হালদা চরে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। অপহরণের চার ঘণ্টা পর স্বজন ও স্থানীয়রা দুজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। ভুক্তভোগী দুজন হলেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন সোহেল ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন। সোহেলের বাড়ি নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কাছে, সাজ্জাদের বাড়ি একই ইউনিয়নের কছুখাইন গ্রামে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই ছাত্রদল নেতা নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে একটি সালিশি বৈঠকে অংশ নিতে যান। তারা সেখানে অবস্থানের সময় হঠাৎ করে একদল সন্ত্রাসী কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজি টেক্সি নিয়ে দুজনকে টানাহেঁছড়া করে সিএনজিতে উঠিয়ে নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটকুলের দিকে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা তাদের হাত–পা ও চোখ বেঁধে বেড়ধক পিটিয়ে একটি নৌকায় উঠিয়ে পার্শ্ববর্তী হালদা চরে নিয়ে যায়। সেখানে আরেক দফা পিটিয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে ভেবে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। ঘটনার পর চরে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বিষয়টি স্বজন ও স্থানীয়দের জানায়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান আহত দুজনের স্বজন ও এলাকার লোকজন। তারা সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
জানা যায়, ছাত্রদল নেতা সোহেল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে মাঠে ছিলেন। তিনি আন্দোলনের সময় চট্টগ্রাম শহরে ছাত্র–জনতার সঙ্গে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন বলে তার কয়েকজন সহকর্মী জানান। আহত ছাত্রদল নেতা সোহেলের পিতা সওকত হোসেন এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, তার ছেলের কাছে বিএনপির এক নেতার পক্ষে থাকা চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তারা চাঁদা না পেয়ে তার ছেলেসহ সঙ্গে থাকা ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদকে অপহরণ করেছে হত্যার উদ্দেশ্যে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তারা দুজনের হাত, পা, চোখ বেঁধে চরে নিয়ে বেদম প্রহার করেছে। শেষে তাদের মৃত্যু হয়েছে ভেবে হয়ত ফেলে চলে গেছে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের নামে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
এই ঘটনার জন্য উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের দায়ী করেছেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর হাবিবুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে দুই ছাত্রদল নেতা একটি সালিশি বৈঠকে ছিলেন। ওই সময় বিএনপির বিবদমান একটি গ্রুপের কয়েকজন তাদের উঠিয়ে নিয়ে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।