রাউজান চিকদাইর ইউনিয়নের লবা চৌধুরী গ্রামের এক সাধারণ কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি লালন পালন করেন গরু। এখন এই কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তার সেবা যত্নে বেড়ে ওঠা ঘরের গরুর বাছুরটি নিয়ে। রোগাক্রান্ত বাছুরটির অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। এমন অবস্থার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে একটি সিএনজি টেঙি করে বাছুরটি নিয়ে আসেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের চিকাৎসালয়ে। এখানে দ্রুত চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসেন চিকিৎসক। লবা চৌধুরী সংকটাপন্ন গরুর বাছুরটির শরীরের উপর একটি চাদর ঢেকে দিয়ে পাশে বসে ছিলেন। তার মত রাউজানের অনেকেরই গৃহপালিত গরু নিয়ে এখন ছুটে আসছেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের এই চিকিৎসালয়ে। এখানে রোগাক্রান্ত গরু চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন। পশু নিয়ে আসা মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় কোরবানির ঈদের পশু বাজার থেকে লাম্পি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে গ্রামে। এই ভাইরাসে বিভিন্ন গ্রামে গরু মারা যাচ্ছে। এই চিকাৎসালয়ের চিকিৎসা সেবাদানকারীরা বলেছেন, পশু পালনকারীরা রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা অবস্থায় সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে আসেন না। তারা আক্রান্ত পশুটির চিকিৎসা করান এলাকার সনদবিহীন পশু চিকিৎসকদের মাধ্যমে। ভুল চিকিৎসায় রোগ জটিল হয়ে পড়লেই ছুটে আসেন এই হাসপাতালে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিয়ে আসা রোগাক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাউজানের এমন পরিস্থিতির মধ্যে পশু সম্পদ বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আশরাফুল আজিম রাউজান পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকনির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এই রোগের ঔষধ সরবরাহের চেষ্টা করা হবে। তিনি ভুয়া চিকিৎসক ও ভেজাল মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে সংশ্লিষ্টদের নিদেশ দেন।
উপজেলা পশু পালন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী বলেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লোকজন ভুয়া চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা করিয়ে রোগ জটিল করে এখানে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছেন। সনদবিহীন ভুয়া চিকিৎসকরা ঔষধ বিক্রেতাদের কাছ থেকে কম দামে নকল ও ভেজাল ঔষধ কিনে পশুর উপর প্রয়োগ করে অবস্থা আরো খারাপ করে থাকে। এমন অবস্থার মধ্যে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আক্রান্ত পশুকে ভাল করে ফিরিয়ে দিতে। এই কর্মকর্তার অভিমত রোগ ধরা পরার সাথে সাথে এখানে আনা হলে আক্রান্ত গরু মৃত্যুর ঝুঁকি শূন্যের কোঠায় থাকত।