রমা চৌধুরীর প্রয়াণ দিবসেই চলে গেলেন আলাউদ্দিন খোকন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

গ্রামের বাড়ি বরিশালে হলেও পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামেই স্থায়ী ছিলেন। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি প্রয়াত লেখিকা ও বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর ছায়াসঙ্গী ছিলেন। চট্টগ্রাম শহরে তাঁর সঙ্গে বই নিয়ে হেঁটে বেড়াতেন। ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন রমা চৌধুরী। এর ৫ বছর বাদে গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর রাতে মারা গেলেন শহীদ জননীর সহচর আলাউদ্দিন খোকন। তিনি ছিলেন একজন ভালো মানুষ, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও মানবতার কর্মী।

গত রোববার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহিরাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। তিনি স্ত্রী কবি রিমঝিম আহমেদ ও কন্যা আযরাহ দীপান্বিতা তিতলিসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। তার অকাল মৃত্যুতে নগরীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর লাভলেইনের ভাড়া বাসা থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মহড়া কক্ষে বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় যাওয়ার পথে অসুস্থতা বোধ করেন আলাউদ্দিন খোকন। তাকে চমেক হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

গতকাল বেলা ১১টার দিকে আলাউদ্দিন খোকনের মরদেহ চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আনা হয়। এখানে তাঁর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ, নিউ ডিএস প্রিটার্স, কর্ণফুলী ফিসমিল লিমিটেড, বয়ান শিল্পাঙ্গন, চট্টগ্রাম সাহিত্য পাঠচক্র ও বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় শিক্ষক, কবিসাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষ আলাউদ্দিন খোকনের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। গতকাল বাদ জোহর ফিরোজ শাহ কলোনি বড় মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে মরহুমের লাশ ফিরোজ শাহ কলোনি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আলাউদ্দিন খোকন প্রায় তিন দশক ধরে চট্টগ্রাম নগরীতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক বিভিন্ন উদ্যোগে সামনের সারিতে থেকে কাজ করে গেছেন। প্রসঙ্গত, দুই বছর আগে কোভিডে আক্রান্ত খোকনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ছোটখাটো একটা স্ট্রোকও হয়েছিল। ভারতে চিকিৎসা নিয়ে এসে কিছুদিন আগে একেবারে সুস্থ হয়ে উঠেন। খোকনের মৃত্যুতে মানুষ শোকাহত। কারণ তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের হৃদয়বান মানুষ। এই শহরের শিক্ষিত লোকমাত্রই তাঁকে চেনেন। তাঁর কথা ভাবলেই একটা দৃশ্য ভেসে ওঠে, বৃদ্ধা রমা চৌধুরীর হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৪টি বছর দিদির সঙ্গে ছিলেন খোকন। দিদির চলে যাওয়ার দিনে চলে গেলেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেএম সেন হলে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালায়৫ দিনব্যাপী জন্মাষ্টমী উৎসব আজ শুরু
পরবর্তী নিবন্ধজ্বালানি ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ২ ওজনস্কেল চালু চসিকের