ফটিকছড়ির ভূজপুরের নারায়নহাটে যৌতুকের জন্য মারধর করে স্ত্রীকে খুনের দায়ে স্বামী মো. সুমনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও প্রদান করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত মো. সুমন ভূজপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০ এর ১১ (ক) ধারার এ মামলা পরিচালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জেবুন্নাহার লীনা। ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, মোট ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেছেন। মামলার অপর আসামি মো. টিপুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতসূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর যৌতুকের জন্য মারধর করে স্ত্রী মনি আক্তারকে হত্যা করে স্বামী মো. সুমন। এ ঘটনায় মনির ভাই মো. আব্বাস বাদী হয়ে মো. সুমন ও তার মামাতো ভাই মো. টিপুর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রেমের সম্পর্ক থেকে মনি ও সুমনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুমন মনিকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকে। মনি কাজ করতো হালদা ভ্যালি চা বাগানে। সেখান থেকে হওয়া আয় থেকে তিনি তার স্বামীকে মোটরসাইকেল কিনে দেন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকাও প্রদান করেন। এসবের পরও সুমন নির্যাতন থামান নি। ঘটনার আগের দিনও সুমন শ্বশুরের কাছে যৌতুক চান। এতে শ্বশুর অপারগতা প্রকাশ করলে মামাতো ভাইকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে গিয়ে মনিকে মারধর শুরু করেন। এতে গুরুতর আহত হয় মনি। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
আদালতসূত্র জানায়, তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করলে আদালত পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সুমনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।