যোগ্য হলে যোগ্যতা বাড়ে। যোগ্যতা কী? যখন কোনো কাজ করতে সক্ষম তাই যোগ্যতা? নাকি যোগ্যতার আরও বৃহৎ সংজ্ঞা আছে? কেননা কোনো মানুষের সকল কাজে সমান যোগ্যতা দেখাতে পারে না। তাই বলে কি আপনি তাকে অযোগ্য বলতে পারেন? কিংবা সে যোগ্য নয় বলতে পারেন কি? তাহলে যোগ্যতার সজ্ঞায় কী বলবেন। ব্যক্তিত্বের মতোও যোগ্যতা ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্নরূপ বা ভিন্নতা রাখে।
কম কথা বলা মানুষ, বোবা হয়ে থাকা মানুষ অনেক যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। যে মানুষ কথাই বলে না তার ভুল আপনি কীভাবে ধরবেন? তাকে কথা বলতে বলেন দেখবেন সে কথাতেই তার যোগ্যতার মাপকাঠি বের হয়ে যাবে। বিপরীতে বেশি কথা বলা মানুষ বেশি কথা বলে বলেই অনেক কথার মাঝেও ভুল কথাও বের হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে তাকে আপনারা অনুমান করতে পারেন সহজেই। কিন্তু সে কি সব কথাই ভুল উপস্থাপন করে? নাকি তার কথায় আপনারা হতবাক হয়ে যান যে এত জ্ঞানী কথা কীভাবে বলে? আর তাতে আপনারা প্রমাণ করে ফেলেন সে যোগ্য কিংবা অনেক বেশি যোগ্যতা রাখে। আর এজন্য কি তাকে যোগ্যতার খেসারত দিতে হয অযোগ্য বিবেচনায়?
বেশি কথা বলে মানুষ হয়ে দু ধরনের হয়। প্রাসঙ্গিক কথা বলা মানুষ, আর অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা মানুষ। এখন যদি দেখেন তিনি উচ্চ শিক্ষিত ও মার্জিত, আর কথা বেশি বলে। তখন তাকে কীভাবে বিবেচনায় নিবেন। আর তাকেই আপনাদের বেশি ভয় নয় কি? তাকে আপনাদের ভয় হয় বলেই কি অযোগ্য প্রমাণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন না?
জ্ঞানী লোকের কথা কম প্রবাদ প্রচলিত। কিন্তু কিছু কিছু কাজ আছে জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে হয়। কথা না বলে কীভাবে জ্ঞান ছড়াবেন, পারবেন? কিন্তু আপনি ডাক্তার এডভোকেট শিক্ষক কিংবা রাজনীতিবিদ কম কথা বলে হতে পারবেন? কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই পারবেন। কিন্তু আপনি বিকশিত হবেন নিজে। অন্যকে বিকশিত করার জন্য আপনাকে বলতে হবে। না হলে অনুপ্রাণিত করা, উৎসাহিত করা, সুজনশীল প্রেষণায় উজ্জীবিত করা এসবের জন্য কম বেশি কথা না বললেই নয়। মহাজ্ঞানীর প্রাসঙ্গিক কথারও সমালোচনা থাকবে। কেউ সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। আর যার কথায় সমালোচনা থাকে না তার কথাগুলো প্রাসঙ্গিক বলা বাহুল্যতার শামিল বলে মনে হয়।
আবার কথা বলা মানুষগুলোর প্রাসঙ্গিক কথাতেও সমালোচনার ঝড় উঠবে স্বাভাবিকভাবে। তখনই তার যোগ্যতার প্রশ্ন আসবেই আর যোগ্য অযোগ্য বিবেচিত হবেই। আর যোগ্যতার খেসারত দিতে হবে বৈকি।
তাই বলে অযোগ্য থাকবেন? অযোগ্যতার প্রমাণে গা ভাসাবেন? যোগ্যতার খেসারত দিতে হবে বলে পিছিয়ে থাকবেন? বিবেচনা আপনার। যোগ্যতা যার আছে সে সমালোচিত। তারাই যোগ্য অয়োগ্যতার প্রমাণে পরীক্ষিত।
যোগ্য লোকের যোগ্যতাকে ভয় না পেয়ে তার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আপনিও যোগ্যতা স্বাক্ষর রাখেন। এবং যোগ্যতম ব্যক্তিকে যোগ্য সম্মান দিয়ে যোগ্য স্থানে নিয়ে দেশ ও দশের উপকারে সামিল হওয়া কাঞ্চনীয়। এটা শুধু নিজের নয় দেশ ও দশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।