বিশ্বজুড়ে বিভিন্নভাবে আলোচিত–সমালোচিত হচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিষয় শ্রীলংকান এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বিপক্ষে ‘টাইমড আউটের’ আবেদন। সাকিব স্বীকার করেছেন বিষয়টি ঠিক না ভুল এটি বিবেচনা নয়, বাংলাদেশের জয়টাই ঐ মুহূর্তে মুখ্য হয়ে উঠেছিল তার কাছে। বিষয়টা ক্রিকেট স্পিরিটের সাথে যায় না, এমন সমালোচনা অনেকেই করেছেন সাকিবের বিরদ্ধে। কিন্তু বিষয়টাকে সাকিব নিজে দেখছেন একটু অন্যভাবেই। মাঠে দেশের হয়ে খেলাটা তার কাছে যুদ্ধ, আর যুদ্ধে জিততে তো সবই করতে হয়। ম্যাচ শেষের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সঞ্চালক সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের এক প্রশ্নে বাংলাদেশ অধিনায়ক সেটাই বলেছেন, ‘এটা আইনে আছে। আমি জানি না এটা ঠিক নাকি বেঠিক। মনে হচ্ছিল আমি যুদ্ধে আছি। আমার একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হতো। আমাকে দলের জয় নিশ্চিত করতে হতো। সে জন্য যা দরকার তা করব। ঠিক নাকি বেঠিক, এ নিয়ে বিতর্ক হবে। যদি আইনে থাকে, তাহলে আমার এই সুযোগগুলো নিতে আপত্তি নেই। ম্যাথুজের সাথে ঐ বিষয়টা লড়াই করার তাড়না আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আমার বয়স ৩৬, স্বাভাবিকভাবে লড়াইয়ের মানসিকতা সবসময় আসে না। কিন্তু আজ লড়াইয়ের বিষয়টা সহজেই মনের মধ্যে এসে গিয়েছিল।’ সাকিব তার অল রাউন্ড পারফরমেন্স দিয়ে বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। ৫৭ রানে দুই উইকেট তুলে নেবার পর ব্যাট হাতে ৬৫ বলে খেলেছেন ৮২ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস। শ্রীলংকার দেয়া ২৭৯ রানের টার্গেট ৫৩ বল হাতে রেখে টপকে যায় বাংলাদেশ। সাকিব আরো বলেছেন, ‘আমি যখন টসে জয়ী হই তখন বোলিং নিতে কোন দ্বিধাবোধ করিনি। এখানে আমরা অনুশীলন করেছি, যে কারনে জানতাম সন্ধ্যায় প্রচুর শিশির থাকবে। শান্তর সাথে পার্টনারশীপটা ভাল ছিল, তবে দুজন মিলে খেলাটা শেষ করতে পারলে আরো খুশী হতাম।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর পারফরমেন্সের গ্রাফ ক্রমেই নীচে নামতে থাকে। টানা ছয় পরাজয়ে সেমিফাইনালের দৌঁড় থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। দেরীতে হলেও লংকার বিপক্ষে জয়ে কিছুটা হলে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সাকিব বলেন, ‘আমাদের আরো ধারাবাহিক হওয়া উচিত ছিল, হতাশাটা এখানেই। বোলাররা সামনে থেকে আজ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। স্পিনাররা রান আটকে দিয়েছে, আজ দুজন স্পিনারই ভাল বোলিং করেছেন। বোলিংই আমাদের এবারের বিশ্বকাপে জয়ের পিছনে কাজ করেছে। বিশ্বকাপে ফাস্ট বোলাররা ভাল বল করেছে। আমরা প্রত্যাশানুযায়ী খেলতে পারিনি। কিন্তু আমরা জানতাম লড়াইয়ে ফিরে আসার মানসিকতা আমাদের আছে। আমাদের নিজেদের ওপর আস্থা আছে। আমরা ফিরে আসার জন্য পরিশ্রম করেছি, আজ তার ফল পেয়েছি। মাঠও আমাদের সহযোগিতা করেছে। এখানকার বাউন্ডারি ছোট, লংকান বোলারদের গতিকে আমি কাজে লাগিয়েছি। সৌভাগ্যবশত: সেগুলো কাজে এসেছে, আর আমারও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল।’