যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে জাহাজটি কেন গেল

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৫ মার্চ, ২০২২ at ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি জেনে বুঝে কেন এই যুদ্ধ কবলিত অঞ্চলে ঢুকল? ১৫ ফেব্রুয়ারি জয়েন্ট ওয়ার কমিটি জায়গাটি যুদ্ধকবলিত অঞ্চল ঘোষণা করে। জাহাজটি নোঙর করে ২২ ফেব্রুয়ারি, যা সম্পূর্ণ প্রশ্নবিদ্ধ। এক্ষেত্রে বিএসসির জাহাজ পরিচালনায় যে গাফিলতি হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ)। ওই কমিটিতে বিএমএমওএ’র ২ জন প্রতিনিধিকে রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর বারিক বিল্ডিং এলাকায় বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এসব কথা তুলে ধরা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএমওএ’র সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) এর পক্ষ থেকে অবিলম্বে জাহাজের নাবিকদের ফেরত আনার দাবি জানানো হয়। নিহত জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় বীর ঘোষণা এবং জীবিত ২৮ নাবিককে সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা এবং পুরস্কার দেওয়ার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। চার্টার পার্টি বিধিমালা অনুযায়ী কোনও জাহাজ কোম্পানি তার জাহাজের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধকবলিত এবং জলদস্যুপ্রবণ এলাকাতে জাহাজ গমনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। এক্ষেত্রে জাহাজ মালিক বিএসসির পক্ষ থেকে জাহাজটিকে যুদ্ধকবলিত এলাকায় কেন গমনের অনুমতি দিল?
জাহাজ পরিচালনায় বিএসসির সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের আজকে এই মৃত্যু ও নাবিকদের দুর্দশা দেখতে হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধির চরম ক্ষতি হয়েছে। এই মৃত্যুর দায় কে নেবে? এই ক্ষয়ক্ষতির দায় কে নেবে?
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএমএমওএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম জিলানি ও মো. ইফতেখার আলম।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরু হয় ইউক্রেনে। তখন থেকেই জাহাজটি গত আট দিন ধরে আটকে আছে সেখানে। গত বুধবার অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে একটি মিসাইল এসে পড়লে সাথে সাথে জাহাজে আগুন ধরে যায়। এসময় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান আরিফ ঘটনাস্থলে মারা যান। শুরুতে নাবিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। অলভিয়া বন্দর থেকে একটি টাগবোট এসে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। নাবিকদের চেষ্টায় জাহাজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে তার নিথর দেহ পাওয়া যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভুট্টো-ইয়াহিয়ার পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক
পরবর্তী নিবন্ধস্বল্প খরচ, বেশি লাভ পটিয়ায় বাড়ছে সরিষা চাষ