রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধান এবং মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত শরণার্থীদের কার্যকর প্রত্যাবাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্বের ভূমিকায় আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে মঙ্গলবার এক টেলিফোন আলোচনায় এই আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সুপারিশ করেছেন, বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ করতে পারে। তিন দিনের সফরে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ব্লিনকেনের সঙ্গে তার সরাসরি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধির কারণে টেলিফোন আলাপে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর বিডিনিউজের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে অব্যাহত মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে নেতৃত্বের ভূমিতায় আসা এবং আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে উদ্যোগী হওয়া, যাতে টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর যথেষ্ট রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব হয়। মিয়ানমারের কয়েকজন ব্যক্তির উপর অবরোধ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেশটির উপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ এবং সেখান থেকে জিএসপি সুবিধা উঠিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন মোমেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিয়ানমারে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধানের বিষয়টি উঠে আসার কথা জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, দুই নেতা বার্মা, রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধান এবং শ্রম ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। রোহিঙ্গা সঙ্কটের বাইরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারসহ কৌশলগত বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেক্রেটারি ব্লিনকেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরো জোরদার করার উপায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মত অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় একসাথে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। দুই নেতা দক্ষিণ এশিয়া ও বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে জানানো হয়েছে সেখানে।