অধিনায়কত্বের তৃতীয় মেয়াদের শুরুটা মোটেও ভালো হলোনা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনেই হারের শংকায় টাইগাররা। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতায় বড় লজ্জার হাত থেকে রক্ষা পেলেও পরাজয় যেন ঘিরে ধরেছে টাইগারদের। সাকিব নিজে হাফ সেঞ্চুরি না করলে কি লজ্জাটাইনা পেতে হতো। সাকিব আল হাসান যখন ক্রিজে গেলেন বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৪১। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজনই ফিরেছেন শূন্য রানে। কিন্তু এসবে যেন তোয়াক্কাই করতে চাইলেন না সদ্য টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়া সাকিব। উল্টো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে গেলেন। শেষ পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশ ইনিংসের বড় সৌন্দর্য।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সাকিব ফিফটির দেখা পেলেন বলেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ পর্যন্ত একশ পেরিয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে যেন রাগ করেই ব্যাটিং করছেন সাকিব। ব্যাটিংয়ের মতো দিন শেষে কথার ঝাঁঝও ছড়িয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত অল আউট হয়েছে ১০৩ রানে। এর মধ্যে সাকিব একাই করেছেন ৫১ রান। ৬৭ বলের এই ইনিংসে চার মেরেছেন ৬টি, ছক্কা ১টি। আউট হয়েছেন ছক্কা মারতে গিয়েই। পরে ২ উইকেটে ৯৫ রান তুলে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের ঠিকই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সাকিব। টাইগার অধিনায়ক বলেন এখানে আসলে ব্যাটসম্যানদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের কাজটা তাদেরই করতে হবে। কেউ এসে তাদের মুখে তুলে খাইয়ে দিয়ে যাবে না। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছে সবাই। এতে কোন সন্দেহ নেই। আশা করি দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা এমনভাবে ঘুরে দাঁড়াবে যেন আমরা এই ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। সেই চ্যালেঞ্জটা থাকবে। তবে এই চ্যালেঞ্জ সাকিবের ব্যাটসম্যানরা কতটা নিতে পারবে সেটা বলাই বাহুল্য।
সাকিব বলেন এই ইনিংসে বাংলাদেশের ছয় ব্যাটার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। বেশিরভাগই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এমন ব্যাটিংয়ের কোনও ব্যাখ্যা থাকতে পারে না। সাকিবের সরল স্বীকারোক্তি, কোনো ভাবে ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগই দেখি না আমি এখানে । আমার কাছে এমন ব্যাটিং এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। আমি জানি না অন্য কারো কাছে আছে কি না। এভাবে যখন আপনি একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসবেন তখন সেখানে কিছু বলার থাকেনা। এক ইনিংসে ছয়জন শূন্য রানে আউট হলে সেখানে আপনি বড় ইনিংসের আশা করতে পারেননা। কাজেই দায়িত্বটা তাদেরকেই নিতে হবে যাদের নেওয়া উচিত। যার যা কাজ সেটা তাকেই করতে হবে। পরের ইনিংসে ফিরে আসার রাস্তা খুঁজতে হবে।
ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে ছয় ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হওয়ার স্মৃতি টাটকা থাকতেই আবারো ছয়জন ফিরলেণ রান না করেই। যা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে ঘটল তৃতীয়বার। তবে সাকিব এখন আর সে সব নিয়ে ভাবতে চাননা। সামনে কি করবে সেটাই দেখতে চান। তিনি বলেন দলে কেউ পারফর্ম না করলে তাকে বাদ দেওয়াটা সহজ। টিম ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে সাধারণত যেটা হয় যে, এ ক্ষেত্রে কোচ-অধিনায়কের কাজটা সহজ। কেউ পারফর্ম করল না, তাকে বাদ দিয়ে দেই। সবচেয়ে সহজ কাজ কোচ, অধিনায়ক ও নির্বাচকদের। তুমি পারফর্ম করছ না, বাদ দিয়ে দিলাম। কাজেই দলে থাকতে হলেও পারফর্ম করতে হবে।