যাত্রীদের দুর্ভোগ, ভোগান্তি

দক্ষিণ চট্টগ্রাম ।। ১৪ দফা দাবিতে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সকাল-সন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘট, পরে ২ ঘন্টা আগে প্রত্যাহার

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ

অবৈধ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা ও মহাসড়কে রুট পারমিটবিহীন যান ও দ্বিতল বাস চলাচল বন্ধসহ ১৪ দফা দাবিতে গতকাল সড়ক পরিবহন মালিকশ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে সকালসন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘট নির্দ্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিকেল চারটার দিকে এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় সংগঠনের নেতারা। নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, প্রচন্ড গরম এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে ২ ঘণ্টা আগেই এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন তারা। ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর থেকে চট্টগ্রামকঙবাজার মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।

ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের কারণে মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় হাজার হাজার যাত্রীদের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ধর্মঘটের কারণে কঙবাজার, বান্দরবান জেলা ছাড়াও পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলা রুটেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এসব উপজেলা থেকে যারা পেশাগত কারণে নিয়মিত চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করেন, তারা ভোগান্তিতে পড়েন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলকঙবাজারবান্দরবান জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মুছা আজাদীকে বলেন, প্রচন্ড গরমে দাবদাহ ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ব নির্ধারিত ধর্মঘট ২ ঘণ্টা আগেই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বিকেল চারটার পর থেকে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রামদক্ষিণাঞ্চলকঙবাজারবান্দরবান জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বানে পরিবহন ধর্মঘট চলাকালীন ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, টার্মিনাল কানেকটিং রোড, শাহ আমানত সেতু বশিরুজ্জামান চত্বর, পটিয়া পৌর বাস টার্মিনাল, দোহাজারী বাস স্টেশন, কেরানীহাট, বান্দরবান বাস টার্মিনাল, লোহাগাড়া/আমিরাবাদ বাস স্টেশন, চকরিয়া শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনাল, কঙবাজার পৌর বাস টার্মিনালে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অবস্থান কর্মসূচিতে মালিকশ্রমিক নেতৃবৃন্দ বহদ্দারহাট আঞ্চলিক বাস টার্মিনাল পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইউনুছ কোম্পানি, নবাব মিয়া কোম্পানি, শ্রমিক নেতা মৃণাল চৌধুরী, আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল হুদা চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মুছা, সদস্য সচিব মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী, নির্বাহী পরিষদ নেতৃবৃন্দ যথাক্রমে ইকবাল মো. সামশুল হুদা টাইডেল, আবুল কালাম আবু, জহিরুল ইসলাম, কামাল আজাদ, আবুল কালাম, শাহজাহান ভুট্টু, হাবিবুর রহমান চৌধুরী, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, মোবারক হোসেন, জাফর উদ্দিন চৌধুরী (ভিপি জাফর), হারুনুর রশিদ, সুব্রত কান্তি দাশ (ঝন্টু) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আহুত পরিবহন ধর্মঘট কোনো রকম বিশৃঙ্খলা, পিকেটিং ও হঠকারিতা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। যাত্রী সাধারণের যাতায়াত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ায় মানবিক বিবেচনায় সন্ধ্যা ৬টার পরিবর্তে বিকাল ৪টায় ধর্মঘটের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ জনস্বার্থে সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমানো সহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জানান। এছাড়া সমাবেশ থেকে ধর্মঘটজনিত কারণে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত বিঘ্নিত হওয়ায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন নেতৃবৃন্দ।

আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, বান্দরবানে গতকাল সকাল ছয়টা থেকে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কঙবাজার, কেরানীহাট সড়কে এ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বেড়াতে আসা পর্যটকেরা। দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে মাইক্রো, জিপ, সিএনজি টেঙিগুলো। বাধ্য হয়ে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যেতে হয়েছে দূরদূরান্তে।

বান্দরবান ট্রাফিকের কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ ছিলো। তবে সবগুলো রুটে ছোট গাড়িগুলো চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। হঠাৎ এ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়া পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক মাঠে ছিলো পুলিশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুলিশের সাবেক পরিদর্শক শাহ আলমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধমায়ের খোঁজে শাবকটি ঘুরছে লোকালয়ে