নগরীর রহমতগঞ্জ এলাকায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়ির দখল ও অবস্থানের উপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে হাই কোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন বলে জানায় বিডিনিউজ। আদালত রুলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বাড়িটিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসান এম এম আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। একই সাথে যাত্রামোহন সেনগুপ্তের ঐতিহাসিক বাড়িটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে সংরক্ষণ করার ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ওই স্থাপনাকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সংস্কৃতি সচিব, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ ছয়জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এদিকে যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি রক্ষায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও। গতকাল চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে জেলা প্রশাসনের দেওয়ানি মামলা শাখার পক্ষ থেকে বাড়িটি না ভাঙার জন্য স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আদালত ভবনটি ভাঙার ওপর একমাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
অপরদিকে গতকাল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের সাথে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত ও কবি ও সাংবাদিক আব্দুল মোমেন।
বিশেষ শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন যাত্রা মোহন সেন (জেএমসেন) ভবন ভাঙ্গা চক্রান্তের হাত থেকে রক্ষা করে ওখানে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি রক্ষার্থে যাদুঘর প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি মানিক চৌধুরীর ছেলে কল্পতরু চৌধুরী কাজল ও চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের সংগঠক আলিউর রহমান।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা যাত্রা মোহন সেনগুপ্তের দেড়‘শ বছরের পুরনো বাড়িটি শুধু আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষার স্থান না। এটি বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের সাহসী তরুণের সাহসী ঠিকানা। তাই এই স্মৃতি জাতীয় স্বার্থে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিধন্য এই বাড়ি রক্ষার্থে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পত্র লিখবেন বলেও জানান।