আমাদের দেশে যাকাতের নামে প্রায়শ ধনী ব্যক্তিদের দরিদ্রদের বিশাল লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের মাঝে লুঙ্গি-শাড়ী, অনেক সময় খাবার বিতরণ করতে দেখা যায়। যেটা মোটেও শরীয়ত সম্মত নয়। কারণ, যাকাতের উদ্দেশ্য বিলাসিতা নয়। সমাজের অসচ্ছল মানুষগুলোর দরিদ্রতা দূর করে তাদেরকে কর্মমুখী করে সমাজ ও দেশের কল্যাণই যাকাতের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। যেটি বর্তমান লুঙ্গি-শাড়ী কিংবা কয়েক বেলার খাবার প্রদানের রীতিতে কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
হাজার হাজার মানুষকে ৫০০/১০০০ টাকা দামের কাপড় কিংবা খাবার ধরিয়ে না দিয়ে গুটি কয়েক গরীব নয়তো অন্তত একজনকে চিহ্নিত করে তাদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা লক্ষ কোটিগুণে উত্তম। আর, আল্লাহর নির্দেশিত পথে প্রতিটি জনকল্যাণকর কাজ ও দ্বীনের প্রচার-প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে যাকাতের একটা অংশ প্রদান করলেও সার্বিকভাবে সমাজ ও দেশের কল্যাণ হয়। ধনী-গরিব সকলের মনে রাখতে হবে যাকাত ধনীদের সমাজের গরীরের প্রতি অনুদান কিংবা করুণা নয়, বরং যাকাত অসহায়-বঞ্চিত মানুষের অধিকার। যাকাত সঠিকভাবে আদায় হলেই ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর করে সাম্যের ভিত্তিতে সমাজ গঠন সম্ভব হবে। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের সবার জানা। ইসলামিক ব্যক্তিত্বগণের মতে, বাংলাদেশে যে সকল যাকাতদাতা আছেন তারা যদি শরীয়াতের আলোকে হিসাব করে যাকাত আদায় করেন আগামী ৫-১০ বছরে দেশে যাকাত খাওয়ার মত লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই, সমাজ, দশ ও দেশের কল্যাণ সর্বোপরি আল্লাহর বিধান যথাযথ পালনের উদ্দেশ্যে যাকাত আদায়ে সামর্থ্যবান সকলের শরীয়ত অনুসারে সঠিক পদ্ধতিতে যাকাত প্রদান করা উচিত। কারণ, যাকাতের জন্য নির্ধারিত অংশটি শরীয়তসম্মতভাবে আদায় না করলে সম্পূর্ণ সম্পদই মুমিনের জন্য হারাম হয়ে যায়।