টানা দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেও মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামী বাবুল আক্তার থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য বের করতে পারেনি টিম পিবিআই।
বাবুল আক্তার নিজেই পিবিআই টিমকে বলেছেন, “আমি বাবুল আক্তার, এতটা সস্তা নই। যা বলতে বলবেন বলে দেব এমনটা ভাবছেন কেন? আমার নার্ভ যথেষ্ট শক্ত।”
শুধু তাই নয়, তিনি ঢাকায় তার বাসার ঠিকানাও ভুল দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আজ শুক্রবার তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কিছুক্ষণ গড়িমসি করে সঠিক ঠিকানা দেন।
এ অবস্থায় টিম পিবিআই ঘটনার প্রধান প্রত্যক্ষদর্শী বাবুল-মিতু দম্পতির সন্তান মাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদের চিন্তা করছে।
বাবুল আক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হলে তাকে চট্টগ্রামে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। ইতোপূর্বেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলায় তার ছেলের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ছেলে ওই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর জিইসি এলাকায় গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন আলোচিত তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম।
শুক্রবার (১৪ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, “বাবুল আক্তার এখন পাঁচ দিনের রিমান্ডে পুলিশি হেফাজতে আছেন। রিমান্ড শেষে পিবিআই বাবুল-মিতু দম্পতির ছেলের সঙ্গে কথা বলবে। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তার বক্তব্য এই মামলায় জরুরি। এর আগেও পুলিশ ছেলের সঙ্গে কথা বলেছে।”
পিবিআই-এর তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, বাবুল আক্তার তার সন্তানদের নিয়ে কিছুটা বিচলিত। তবে রিমান্ডের দু’দিনে তিনি মামলাসংক্রান্ত ব্যাপারে তেমন কোনো কথা বলেননি। এক রকম নিরুত্তর ছিলেন। বাবুল বলেছেন, তার ‘নার্ভ’ যথেষ্ট শক্ত আছে। এখন পর্যন্ত স্ত্রী হত্যার আসামি হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার কোনো ইচ্ছে প্রকাশ তিনি করেননি। কথা বলছেন খুব কম।
মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যাকাণ্ডে পাঁচ বছর পর গ্রেপ্তার বাবুল আক্তার পুলিশকে তার বাসার ভুল ঠিকানা দিয়েছেন।
মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় যে মামলা করেছেন সেখানেও তাই বাবুল আক্তারের ঢাকার ঠিকানা ভুলভাবে লেখা হয়েছে।
শুক্রবার বিষয়টি মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নজরে আসে।
পিবিআই-এর উপ-মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার ভুল ঠিকানা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে বাবুল আক্তারের কাছে সঠিক ঠিকানা চায় পিবিআই।
প্রথমে তিনি ঠিকানা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ঠিকানা দিয়ে দেন। বাবুল আক্তারের গাড়িচালকের সহায়তায় ঠিকানা শনাক্ত করার চেষ্টা করে তারা। এই গাড়িচালককে নিয়েই বাবুল আক্তার পিবিআইয়ের ডাকে গত সোমবার চট্টগ্রাম এসেছিলেন।