যতই বাধা আসুক, কালির ছড়া খাল উদ্ধার করা হবে : মেয়র

একেকজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিধস্যু ও ডাকাত সর্দার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:১৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে যারা পাহাড় কেটেছে তারা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ সময় উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমএর নাম ধরে তিনি বলে বলেন, এই যে জসিম, সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য সে বিখ্যাত ছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নেননি। তারা তাকে গ্রেপ্তারও করেনি এবং শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি। গতকাল দুপুরে নগরের আকবরশাহ এলাকার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় কালিরছড়া খাল পরিদর্শনের সময় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম।

ডা. শাহাদাত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ পাহাড় কাটা। পাহাড় কেটে অপরিকল্পিতভাবে আবাসন প্রকল্প গড়ে টাকার পর টাকা গড়া হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামকে একটি বাসযোগ্য শহর হিসেবে পরিণত করতে পারেনি। আমি মনে করি রাষ্ট্র এটার জন্য দায়ী। কারণ রাষ্ট্র এ ধরনের ভোটের অধিকার হরণ করে একেকজন ভূমিধস্যু ও ডাকাত সর্দারকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই রাষ্ট্র এটার বাইরে (দায়) যেতে পারে না।

তিনি বলেন, যারা ১৬ বছর এই অন্যায়গুলো করেছে, দুঃশ্বাসন করেছে, চট্টগ্রামকে একটি অবাসযোগ্য শহরে পরিণত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের শাস্তির বিচার এ দেশের মাটিতে হবে। শাহাদাত বলেন, এক সময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল। কিন্তু আজ এই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬টিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্প নেয়া হয়েছে এই ৩৬ খালকে ঘিরে। এখনো ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা এই ২১টি খাল উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, পতেঙ্গার গুপ্ত খাল, বাকলিয়ার বীর্জা খাল এবং কৃষি খাল ভরাট হয়ে গেছে। এই খালগুলো মানুষ চিনে না। ২১টি খাল, যেগুলো হারিয়ে গেছে সেগুলো একটা আইডেন্টিফিকেশন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। খাল খনন কর্মসূচি এবং খাল পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার একটা যে পার্মানেন্ট সলিউশন, সেই জায়গায় আমাদের যেতে হবে। জীববৈচিত্র্য, পাহাড় এবং নালা সবকিছুই বাঁচাতে হবে। অন্যথায়, আজকে যারা দায়িত্বে আছেন বা আমরা যারা আছি, সবাইকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অবশ্যই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, কালির ছড়া খাল উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার এবং যারা আছেন উনাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখানে যারা ঘর করেছেন তাদের উচ্ছেদে কাজ চলবে। যতই বাধা আসুক, সন্ত্রাসীরা এখানে আমাদের বাধা দিক। তাদের বাধা উপেক্ষা করে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হবে। সন্ত্রাসীদের আইনের হাতে তুলে দিয়ে চট্টগ্রামকে একটা বাসযোগ্য শহরে পরিণত করবো, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, খাল খালের জায়গায় এবং নালা নালার জায়গায় থাকবে। কালিরছড়া খাল অনেকাংশে নালায় পরিণত হয়েছে, অনেক জায়গায় বাড়িঘর হয়ে গেছে। অনেক জায়গা ভরাট হয়ে গেছে। এই খালগুলো পুনরুদ্ধার করা জরুরি। যদিও এটা সময়স্বাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু কাজটা আমাদের করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রতারণা মামলায় রাউজানের আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরকে গতিশীল ও আধুনিক করতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার