আইন সংশোধনকে কেন্দ্র করে ধর্মঘটের কারণে সমুদ্রে মাছ শিকার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে মৎস্য রপ্তানি খাতে বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে। একই সাথে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগও হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গভীর সাগরে মাছ শিকারে নিয়োজিত আড়াই শতাধিক জাহাজ মাছ শিকার বন্ধ রেখে ফিরে আসায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এসোসিয়েশনের সচিব মোহাম্মদ আবিদ হোসেন আজাদীকে জানান, আইন সংশোধনের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে ৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন ২৫৮টি জাহাজ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এসব জাহাজের ক্যাপ্টেন থেকে শুরু করে সাধারণ শ্রমিক পর্যন্ত সকলেই মাঠে। মাঠে নেমেছেন জাহাজগুলোর মালিক পক্ষও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গভীর সাগরে মাছ শিকারে নিয়োজিত জাহাজগুলো বছরে প্রায় দেড় লাখ টন মাছ শিকার করে। এর একটি বড় অংশ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। ধর্মঘটের কারণে এই রপ্তানি খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
একাধিক জাহাজ মালিক গতকাল আজাদীকে বলেন, বছরে ছয় মাসের বেশি সময় জাহাজগুলো মাছ শিকার করতে পারে না। বাকি ছয় মাসের মধ্যে ঝড়সহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণেও মাছ শিকার বন্ধ থাকে। মাছ শিকারের ভর মৌসুমে এখন এই আন্দোলন নতুন করে সংকটের সৃষ্টি করবে।
সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে আইন করলে এমন সংকট হতো না জানিয়ে একজন জাহাজ মালিক বলেন, যেভাবে আইন করা হচ্ছে তাতে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অসম্ভব। এক লাখ টাকার জরিমানা পঁচিশ লাখ টাকায় নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে এসব বিপদে কে পড়তে চাইবে?
অপর এক জাহাজ মালিক বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ অন্য শ্রমিকেরা কাজে যাবেন না। নাবিকেরা কাজে না গেলে আমাদের কয়েকশ কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়বে। দেশের মৎস্য রপ্তানি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিষয়টি নিয়ে সহনীয় হয়ে একটি পন্থা খুঁজে বের করার জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জাহাজ মালিক বলেন, আইন করুক। আমরাও আইন মেনে সাগরে যেতে চাই। কিন্তু আমাদের হাত-পা বেঁধে যদি সাঁতার কাটতে বলা হয় তা সম্ভব হবে না।
সংশ্লিষ্টদের উদ্ধৃতি দিয়ে মেরিন ফিশারিজ এসোসিয়েশনের সচিব মোহাম্মদ আবিদ হোসেন আজাদীকে জানান, প্রস্তাবিত আইনের ব্যাপারে একটি সুরাহা না হলে সাগরে মাছ শিকার শুরু করার কোনো সম্ভাবনা নেই।