ম্যাজিস্ট্রেটের কথা শুনে বিয়ের অনুষ্ঠানে আসেনি বর-কনে

রাঙ্গুনিয়ায় বাল্যবিবাহ বন্ধ, জরিমানা

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:২০ পূর্বাহ্ণ

কমিউনিটি সেন্টারে চলছে বিয়ের আয়োজন। বর ও কনে পক্ষের লোকজনও এসেছে। দুই পক্ষের অতিথিদের চলছে আপ্যায়ন। কনে পক্ষ অপেক্ষা করছে বরের আগমনের জন্য। ততক্ষণে কনেও এসে উপস্থিত হয়নি। আগত অতিথিদের অনেকে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব চুকিয়ে অপেক্ষায় আছে, কখন আসবে বর-কনে। তাদের সেই অপেক্ষা ক্রমাগত দীর্ঘ হতে লাগলো। তবে এর মধ্যে কমিউনিটি সেন্টারে হাজির ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট। ফলে যাদের ঘিরে এত আয়োজন তাদের আর দেখা মেলেনি। কারণ এলেই মুখোমুখী হতে হবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলমের। তিনি এসেছেন বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে। কারণ কনে পড়ছে ক্লাস সেভেনে। তার এখনো ১৮ বছর হয়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের বুড়ির দোকান এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে।
জানা যায়, ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবরে কমিউটিনি সেন্টারে বর-কনে কেউই আসেনি। বরং কমিউনিটি সেন্টারে উপস্থিত উভয় পক্ষের পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি সব খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় এতিখানায়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদুল আলম বলেন, উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের কাউখালী গ্রামের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর সঙ্গে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড নোয়াগাঁও এলাকার ২৬ বছরের এক যুবকের বিয়ের আয়োজন চলছিল। খবর পেয়ে কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে ওই বিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বর ও কনে পক্ষের কাউকে না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাদের আসতে বলা হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানীর কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহের আয়োজন করায় কনের বাবাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উভয় পরিবারের লোকজনকে বাল্যবিবাহের ফুফল সম্পর্কে বুঝানো হয়েছে। ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবে না মর্মে মেয়ের বাবা ১ লাখ টাকার বন্ডে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধদেড় কোটি টাকার বাঁধ দুই বছর পার না হতেই ঝুঁকিতে