ন্যাশনাল ফিনান্স লিমিটেডের ৩০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের মামলায় চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহীম এবং তার মা গুলশান আরা বেগমকে পাঁচ মাসের দেওয়ানি আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে। তারা নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ও আর নিজাম রোড আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, ঋণ আদায়ের লক্ষে ২০১৮ সালে অর্থঋণ মামলা দায়ের করলে ডিক্রি হয়। ডিক্রি অনুযায়ী ছয় মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও তা হয়নি। একপর্যায়ে ৩০ কোটি ৩৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৮ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জারি মামলা দায়ের করে ন্যাশনাল ফিনান্স লিমিটেড। এরপরও টাকা পরিশোধ করেননি বিবাদীরা। বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হলেও দরপত্র না পড়ায় তা সফল হয়নি। বিআরপিডি সার্কুলার অনুযায়ী ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে সুদ মওকুফ সুবিধা গ্রহণ করে ঋণ পরিশোধের কোন সদিচ্ছা দেখায়নি। ঋণ পরিশোধের যথেষ্ট সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বিবাদীরা ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসছে না। বিবাদী মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহীম একজন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি উল্লেখ করে আদেশে আরো বলা হয়, চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে তার বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণের মামলা চলমান রয়েছে। ঋণ পরিশোধ না করে তিনি দেশে বিদেশে বিলাস বহুল জীবন যাপন করছেন। শুনানি সময় বিবাদীদের পক্ষে তাদের আইনজীবী বলেন, বিবাদীরা বনেদী ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্য। দেশের শিল্প বাণিজ্যের উন্নয়নে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
করোনা জনিত বিশ্ব মন্দার কারণে ঋণের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ঋণের বিপরীতে মূল্যবান সম্পত্তি দায়বন্ধ রয়েছে। বেঞ্চ সহকারী বলেন, হামিদা ডোজা লিমিটেড নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছিলেন বিবাদীরা। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন গুলশান আরো বেগম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হচ্ছেন তার ছেলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহীম।