সিলেট টেস্টে বড় হারের গল্পটা অনেকটাই রচিত হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। দেখার ছিল চতুর্থ দিনে লংকানদের জয়টাকে কতটা বিলম্বিত করতে পারে বাংলাদেশ। মোমিনুল একাই দিনের এক সেশন ঠেকিয়ে রেখেছিল লংকানদের। তারপরও সিলেট টেস্টে বাংলাদেশকে ৩২৮ রানে উড়িয়ে দিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এগিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানরা জয়ের পথ তৈরি করে ফেলেছিল আগের দিনই।
৫ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে গতকাল সোমবার চতুর্থ দিন শুরু করা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত অলআউট হয় ১৮২ রানে। দলের প্রায় অর্ধেক রান আসে মোমিনুলের ব্যাট থেকেই। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে লড়াই করে সেঞ্চুরির আশাও জাগিয়েছিলেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। তবে সঙ্গীর অভাবে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১২ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করে। শ্রীলঙ্কার কাসুন রাজিথা ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৫৬ রানে নেন ৫ উইকেট। টেস্টে আগে একবারই ৫ উইকেটের স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। সেটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই। ২০২১ সালে মিরপুরে ৬৪ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
চতুর্থ দিনের শুরুতেই বাংলাদেশ হারায় নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন মোমিনুল। ৬৬ রান যোগ করেন দুজন। ম্যাচে যা বাংলাদেশের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি। মিরাজকে ৩৩ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রাজিথা। শরিফুল ইসলামকে নিয়ে পরে আবার কিছুট প্রতিরোধ গড়ে ৪৭ রান যোগ করেন মোমিনুল। তাইজুল ও মিরাজের পর শরিফুলের উইকেটও শিকার করেন রাজিথা। পরের বলেই সৈয়দ খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন এই পেসার। এরপর দেখার ছিল মোমিনুল শতরান করতে পারেন কি না। একপ্রান্ত থেকে চেষ্টা করে গেছেন তিনি। কিন্তু বেশি সময় টিকতে পারেননি শেষ ব্যাটসম্যান নাহিদ রানা। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থমকে যেতে হয় মোমিনুল হককে। আর তাতেই ৩২৮ রানের বিশাল পরাজয় মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে।
শ্রীলঙ্কার তিন পেসার মিলেই নিয়েছেন ম্যাচে বাংলাদেশের ২০ উইকেট। ৮ উইকেট শিকার করেন কাশুন রাজিথা। এছাড়া ভিশ্ব ফার্নান্দো নিয়েছেন ৭ উইকেট। আর লাহিরু কুমারার পকেটে গেছে ৫টি উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে রানের হিসেবে এর চেয়েও বড় পরাজয় অবশ্য ৫টি আছে বাংলাদেশের। সবচেয়ে বড় ৩৬৫ রানের হারটিও লংকানদের বিপক্ষে। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশকে হারিয়েছিল লংকানরা। এই ম্যাচে ব্যাটে এবং বলে বাংলাদেশের উপর শতভাগ প্রাধান্য বজায় রেখে খেলেছে। ব্যাট হাতে জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিস। মূলত এই দুজনের জোড়া সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। সে সাথে রাজিথা, ফানংান্ডো, কুমুরাদের বোলিং বাংলাদেশের ব্যাটারদের এক রকম উড়িয়ে দিয়েছে। দুই ইনিংসেই বাংলাদেশের ব্যাটাররা নিজেদের ইনিংসটাকে দুইশ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেনি। ম্যাচের সেরা হয়েছেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক ধানাঞ্জায়া ডি সিলভা। আগামী ৩০ মার্চ থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্ট ম্যাচটি।