গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের হামলায় আহত কাশেম খান (২০) নামে এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক। তিনি বলেন, বিকেল ৩টার দিকে মারা যান তিনি। গত শুক্রবার রাতে গাজীপুরে হামলার শিকার হন কাশেম। তার বাড়ি গাজীপুর বোর্ডবাজার দক্ষিণ কলমেশ্বর গ্রামে। বাবা জামাল হাজী দুই বছর আগে মারা গেছেন। এরপর কাশেমের মা বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
কাশেমের ভগ্নিপতি সজিব আহমেদ শাহিন বলেন, গাজীপুরে তিনরুমের একটি বাড়ি আছে কাশেমের। তেমন কিছু করতেন না, বাড়ি ভাড়া দিয়ে চলতেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে এলাকার কিছু লোকজন তাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাতে জানতে পারি সাবেক মন্ত্রীর বাসায় হামলার শিকার হয়েছে। সেদিন রাতেই কাশেমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজকে মারা গেছেন। হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের প্রতিনিধিরা জানান, কাশেম শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন।
ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কাশেমের শরীরের আঘাত খুবই গুরুতর ছিল। যেদিন তাকে হাসপাতাল আনা হয় সেদিনই তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর থেকে তিনি আইসিইউতে ছিলেন। সেখানেই তিনি মারা যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি : আওয়ামী লীগের হামলায় আহত কাশেম খানের মৃত্যুর খবরের পর সারা দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–আন্দোলন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ওই পোস্টে বলা হয়, গাজীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে শহীদ আবুল কাশেমের জানাজা বুধবার রাত ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পরে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কফিন মিছিল হবে শহীদ মিনার থেকেই। একইসঙ্গে সারা দেশে প্রত্যেক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে শহীদ বীর কাশেমের গায়েবানা জানাজা এবং আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে খাটিয়া মিছিল, সবাই নিজেদের নির্ধারিত সময়ে পালন করবে।
এরইমধ্যে ফেসবুকে হ্যাশট্যাগ দিয়ে ব্যান আওয়ামী লীগ (#BanAwamiLeague) লিখে পোস্ট দিয়েছেন অনেকে। আবুল কাশেমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি লিখেছেন, গাজীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত কাশেম শহীদ হয়ে গেছেন। প্রতিবিপ্লবের প্রথম শহীদ আমার এই ভাই। ইন্টেরিম, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো, করতে হবে।