দৈনিক আজাদীতে কক্সবাজার ভূ-উপরস্থ পানি শোধনাগার স্থাপন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের শ্যালক মিজানুর রহমানের ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা ৪ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড কক্সবাজার শাখায় জরুরি চিঠি দিয়ে মিজানুর রহমানের ব্যাংক হিসেবে থাকা এসব টাকা জব্দ করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক আজাদীতে ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম; নেপথ্যে স্ত্রী-শ্যালকসহ পৌর মেয়র, অনুসন্ধানে দুদক; কক্সবাজার ভু-উপরস্থ পানি শোধনাগার স্থাপন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর কক্সবাজার জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট পৌর মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পানি শোধনাগার স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত জায়গাগুলো প্রভাব কাটিয়ে নিজের স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও শ্যালক মিজানুর রহমানের নামে কিনে নেন। তবে প্রস্তাবিত ওই জায়গা নিয়ে ১৯৮৬ সাল থেকে কয়েকপক্ষের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে হিস্যা সংক্রান্ত মামলা (৫২/৮৬) চলে আসছিল।
অভিযোগ উঠেছে, জমি ক্রয়, নামজারি, অধিগ্রহণসহ পুরো প্রক্রিয়াটিই হয়েছে খুব দ্রুততার সাথে। জমি কেনার রেজিস্ট্রেশন থেকে নামজারি, সর্বশেষ এলএ ক্ষতিপূরণ নেওয়ার প্রত্যেক ক্ষেত্রেই অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৫ জুলাই দুই দাগের ৪৭ শতাংশ জমির অধিগ্রহনের বিপরীতে দুই চেকে ৭ কোটি ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৯৪ টাকা মিজানুর রহমানকে প্রদান করেছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। অথচ আইনজ্ঞরা বলছেন, স্থায়ী ও স্থাবর সম্পত্তির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন মামলা দেওয়ানী আদালতে চলমান থাকলে সরকারি প্রকল্পের জন্য ওই জমি অধিগ্রহণ হলেও এলএ মামলা নিষ্পত্তি করা যায় না।
দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘কক্সবাজার সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রজেক্টের জমি অধিগ্রহণের বিপরীতে মিজানুর রহমানকে প্রদান করা প্রায় সোয়া ৭ কোটি টাকার মধ্যে বুধবার ৪ কোটি টাকার জব্ধ করা হয়েছে।’