কক্সবাজার এলএ শাখায় জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি ও দালালি করে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের ছেলে হাসান জাইন রহমান অ্যারন ও মেয়ে লাইবা রহমানের নামে করা দুইটি এফডিআর (স্থায়ী আমানত) জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) কক্সবাজার শাখায় মেয়র পুত্র ও কন্যার হিসেবে গচ্ছিত প্রত্যেকটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের এফডিআর দুইটি জব্দ করা হয়। এরআগেও কয়েক দফায় মেয়র মুজিবুর রহমান, তাঁর ছেলে হাসান মেহেদী রহমান ও শ্যালক মিজানুর রহমানের বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাব থেকে কয়েক কোটি টাকা জব্দ করে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাবের অভিযানে ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকাসহ গ্রেপ্তার হয় কক্সবাজার এলএ শাখার সার্ভেয়ার ওয়াশিম খান। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুদকের মামলার তদন্ত শুরু হলে কক্সবাজার জুড়ে এলএ শাখার দালালদের মধ্যে আতংক তৈরি হয়। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া ৪ আসামির আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, তাঁর ছেলেসহ কক্সবাজারের দুইজন সাংবাদিক, কয়েকজন আইনজীবী, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলরসহ প্রায় অর্ধশত দালালের নাম উঠে আসে। এছাড়া আসামিদের স্বীকারোক্তিতে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার বর্তমান ও সাবেক প্রায় ৫৭জন কর্মকর্তা কর্মচারির নামে অধিগ্রহণের কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের পুত্র অ্যারন ও মেয়ে লাইবার নামে করা দুটি এফডিআর জব্ধ করার জন্য কয়েকদিন আগে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তারা আজ (রোববার) অ্যাকাউন্ট দুটি ফ্রিজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুই হিসেবে ৫৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক কোটি নয় লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক আজাদীতে “প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম, নেপথ্যে স্ত্রী-শ্যালকসহ পৌর মেয়র, অনুসন্ধানে দুদক, কক্সবাজার ভূ-উপরস্থ পানি শোধনাগার স্থাপন প্রকল্প” শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর কক্সবাজার জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।