করোনার কারণে দু দফা পিছিয়ে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর বোয়ালখালী পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ পুননির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। গত ২ সেপ্টেম্বর এ তারিখ ঘোষণার পর ইতোমধ্যে ৫/৬ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রার্থী কিম্বা ভোটার কারো মাঝে এ নিয়ে তেমন কোন উৎসাহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রায় সবারই একই জিজ্ঞাসা ঘোষিত তারিখে আদৌ কি এ নির্বাচন হবে। নাকি আইনের ফাঁক- ফোকরে আবারো আটকে যাবে এ নির্বাচন। এ অনিশ্চয়তায় মাঠে নামছেন না কেউ। কারণ মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জহুর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র হাজি আবুল কালাম আবু ও যুবলীগ নেতা মো. ইদ্রিস আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি অমীমাংসিত রেখেই এ পৌরসভার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে স্ব-স্ব দাবি নিয়ে এখন হাইকোর্টে দৌড়াদৌড়ি করছে তারা তিনজনই। এর আগে গত ১৯ মার্চ মনোনয়নপত্র যাছাই বাছাইয়ের শেষ দিনে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে হাজি আবুল কালাম আবু ও অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র দাখিলের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইদ্রিস আলমের প্রার্থীতা বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরদিন আপিল করেন তারা উভয়েই। কিন্তু ২৩ মার্চ তাদের এ আপিলও খারিজ করে দেন জেলা কর্মকর্তা। এ সময় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী আর কোন প্রার্থী না থাকায় ২৫ মার্চ আওয়ামীলীগ প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জহুরকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও নাজমুন নাহার। পরে এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন মো. ইদ্রিস আলম। এ রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ মার্চ বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ইদ্রিস আলমকে প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দিলে যথা নিয়মে তাকে প্রতীক দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা । কিন্তু বিপত্তি লাগে যখন এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মো. জহুরুল ইসলাম অন্য একটি বেঞ্চে আবারো রিট করে বসেন তখন। এভাবে কোর্টে বাদ প্রতিবাদের মধ্যে এখনও আটকে আছে মেয়র প্রার্থীদের বিষয়টি। কোর্ট এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন দিক নির্দেশনা দেয়নি। ফলে এ নিয়ে এক প্রকার অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে এখানকার প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে। ফলে ঘোষিত তারিখের মধ্যে আদৌ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা বিষয়টি পরিস্কার নয় কারো কাছে। জানতে চাইলে প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থীই এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ নুরুল ইসনাম বলেন, কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ঘোষিত তারিখেই ভোট গ্রহনের প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। তবে যে সময় যে আদেশ আসে সে মোতাবেক দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে আমাদের। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- এ পৌরসভায় হালনাগাদ তালিকায় মোট ভোটার ৫২ হাজার ৮৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৭ হাজার ১৩৫ জন, নারী ভোটার ২৫ হাজার ৭০৩ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ২৪টি কেন্দ্রের ১৪৫টি ভোট কক্ষে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অপরদিকে, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষদিনে ৩ পদে মোট ৬১ প্রার্থীকে বৈধ ঘোষনা করা হলেও তথ্য গোপনের অভিযোগে সে সময়ে বাতিলকৃত কাউন্সিলর প্রার্থী সোলাইমান বাবুলের মনোনয়ন ফিরে পাওয়ায় এখন শেষপর্যন্ত মোট ৬২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। উল্লেখ্য বোয়ালখালী পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ২১ মে। মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালে ১৯ জুন। সীমনা বিরোধের মামলার কারণে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি