একটি করে ম্যাচ গড়াচ্ছে, আর বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে দেখা মিলছে ক্রমাগত উন্নতির ছাপ। ভুটানকে উড়িয়ে দিয়ে উইমেন’স সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার পর প্রধান কোচ পিটার জেমস বাটলারও গর্বের সুরে বললেন, একটা ভালো দলের মতো দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে। নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে গতকাল রোববার প্রথম সেমি–ফাইনালে ভুটানকে নিয়ে রীতিমতো ফুটবল ফুটবল খেলা করে বাংলাদেশের মেয়েরা। তুলে নেয় ৭–১ ব্যবধানের জয়। দারুণ এক হ্যাটট্রিক উপহার দেন তহুরা খাতুন। জোড়া গোল করেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। গোলের খাতায় নাম তোলেন ঋতুপর্ণা চাকমা ও শিউলি আজিমও। শিরোপা ধরে রাখার শুরুতেই এবার বড় ধাক্কা খায় সাবিনার দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিতভাবে ১–১ ড্র করে তারা। এরপর বাঁচা–মরার লড়াইয়ে ভারতকে ৩–১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ভুটানের বিপক্ষে এলো আরও বড় ব্যবধানে জয়। বাটলার দলের ক্রমোন্নতিতে খুব খুশি। তবে আরও ভালো খেলার তাগিদও দিলেন এই ইংলিশ কোচ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ৯০ মিনিট কোনো খেলোয়াড়ের ইনজুরি ছাড়া শেষ করা। পেশাদারভাবে নিজেদের কাজটা করে যাওয়া। আমাদেরকে একটা ভালো ফুটবল দলের মতো দেখাচ্ছে, এই টুর্নামেন্টে আমাদের আসলেই আরও ভালো হতে হবে। কোনো ইনজুরি নেই দলে। মেয়েরা গোলও পাচ্ছে নিয়মিত। আমি আজ উপভোগ করব। এরপর রিকভারি শেষে ফাইনাল নিয়ে ভাবব। ভালো দিক হচ্ছে, আমরা অনেক নতুন খেলোয়াড়কে খেলার সুযোগ দিতে পেরেছি। যাতে তারা একটু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। জ্বর থেকে সেরে উঠে মাঠে ফিরে দুই বার গোলের আনন্দে ডানা মেলা অধিনায়ক সাবিনাকে নিয়েও খুশি বাটলার। তিনি বলেন সাবিনা অসুস্থ ছিল। তবে আমি ভেবেছিলাম, সে ৪০–৪৫ মিনিট খেলতে পারবে। বিরতির সময় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সে বলল খেলা চালিয়ে যেতে পারবে। তবে, ৩৫–৪০ মিনিট খেলার পরই তাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। সে আসলেই ভালো দুটি গোল করেছে। দলের জন্য সে একটা উদাহরণ। সামপ্রতিক সময়ে দলের অন্দরে–বাইরে চলা নানামুখী বিতর্ক নিয়েও কথা বললেন বাটলার। এই ইংলিশ কোচ বরাবরের মতোই তীর্যক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন আমি খুবই পেশাদার একজন মানুষ। যারা এই মেয়েদের প্ররোচিত করতে চায়, তাদের কেউই আমি যে পর্যায়ে খেলেছি তারা খেলেনি। আমি যে পর্যায়ে কোচিং করিয়েছি তারা করাইনি। সত্যি বলতে এই বিষয়গুলো সামাল দিতে অনেক সময় শান্ত থাকা প্রয়োজন। আমি তাই করেছি ম্যাচের আগে। আজকে খেলতে পেরে ভালো লাগছে। মেয়েরাও খুশি। কেননা, গত ছয়–সাত মাস আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ এবং আবহ আনার জন্য। যে প্রচেষ্টা এবং নিবেদন নিয়ে এই মেয়েরা খেলে। আমি তাদের নিয়ে সবসময়ই খুশি।