মৃত্যুর দিকে ঠেলে না দিয়ে বাঁচার সুযোগ দিন

টুম্পা ভট্টাচার্য | শুক্রবার , ১৯ মে, ২০২৩ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

কিছু লোক দেখানো ভালো মানুষ অনেক আছে কিন্তু পরিস্থিতিতে তাদের আসল রূপ দেখা যায়। এদেশেই শুধু মানুষকে মরে, তাকে বুঝিয়ে দিতে হয় বাস্তবতা কী? কিন্তু কেন? আজকাল যেকোনো কাজ পেতে ক্ষমতা অর্থ কিংবা উচ্চ পর্যায়ের লিংক না থাকলে তাকে কোথাও কোনো সুযোগ দেয়া হয় না। আর যদি মেয়ে হয় তাহলে তো কোনো কথায় নেই! সত্যি যদি আমরা বেঁচে থাকতে মানুষের পাশে মানুষ হয়ে পাশে থাকি তাহলে কারোকে মরে বুঝানোর দরকার নেই। আমরা কারোর সংগ্রামে সাপোর্ট না করে বরং তার জীবন বৃত্তান্ত আর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কৌতুহলী হই আর তাকে নিরুৎসাহিত করি। না হয় তার থেকে সুযোগ খুঁজি! আর এসব কুৎসিত বাস্তবতা ফেইস করে মেয়েরা ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকে। আমাদের সমাজে একটা বদ্ধমূল ধারণা হলো মেয়েদের দায়িত্ব নেয়ার মতো বাবা ভাই কিংবা হাসবেন্ড থাকলে তাকে ঘরে বসে তাদের উপর খেতে হবে। কিন্তু কেন? তার যদি হাত পা বুদ্ধি বিবেচনা থাকে তাহলে তাকে প্রতিবন্ধীর মতো কেন থাকতে হবে? তার সৎ ইচ্ছায় কেন কেউ পাশে থাকবে না? আমাদের সমাজের চোখ খোলাতে কতো জনকে মরে দেখিয়ে দিতে হবে? যে মেয়ের বাবা নেই, যার স্বামী ছেড়ে চলে গেছে কিংবা মারা গেছে অথবা ভাই নেই তাদের সংসার চালানোর সংগ্রামটা আমাদের চোখে পড়ে। দুঃখ বোধও করি। কিন্তু এমনও অনেক সংসার আছে যার সব থেকেও নিজ সম্মানের কথা ভেবে মানসিক অনেক নির্যাতন মেনে নিয়ে যাচ্ছে। বাবা মা পরিবারের কথা ভেবে, অনেক শিক্ষিত মেয়েরা বর্তমানে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছে! হ্যাঁ এটা অহরহ ঘটছে। না হয় একটা ডাক্তার মেয়েকে মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে হতো না। কিছু মাস আগেও এক শিক্ষিত মেয়ে একই কারণে মরলো। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। এই দায় কার? আমাদের পরিবারের। পরিবার সবসময় মেয়েদের মেনে নেয়ার বোঝা চাপিয়ে চলছে আর মেয়েরা মা বাবার সম্মান রক্ষায় নিজেকে উৎসর্গ করেছে। আর দিন শেষে সেই মেয়েকেই সবদিকে কথা শুনতে হচ্ছে। তাই দয়া করে মা বাবারা মেয়েদেরকে উচ্চ পর্যায়ের স্বামীর স্বপ্ন না দেখিয়ে নিজ যোগ্যতায় উচ্চ ক্যারিয়ার গড়তে সাপোর্ট দিন স্বপ্ন দেখান। একটা ছেলেকে যে মনমানসিকতা নিয়ে মানুষ করেন ঠিক সেভাবে একটা মেয়েকেও মানুষ করেন। আর ভুলেও অর্থ সম্পদের লোভ দেখাবেন না কিংবা সন্তানকে অর্থ সম্পদের বাহাদুরি শেখাবেন না। তার সম্পদ তাকে তৈরি করতে উৎসাহ দিন এতে করে সে বুঝবে ইনকাম করা কিছু অর্জন করা কতো কষ্টের। যার মূল্য সে নিজেই বুঝবে। আর সমাজবাসী বন্ধুরা কারোকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে না দিয়ে বরং তাকে সাপোর্ট করুন। বাঁচার জন্য জায়গা দিন যাতে আমরা একটা সুন্দর দিন সামনে পায়। না হয় করোনা নয় তার থেকে বড় গজব এসে সব শেষ করে দিতে সময় বেশি লাগবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমায়ের সাথে
পরবর্তী নিবন্ধইক্বামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহীহ্‌ ইসলামী সংগঠনসমূহের ঘাটতি