মূল্যস্ফীতি কমে ৯.১৭ শতাংশ ২৬ মাসে সর্বনিম্ন

| মঙ্গলবার , ৬ মে, ২০২৫ at ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ

সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসে শহর ও গ্রামীণ পর্যায়ে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উভয় খাতেই ‘খরচ কমার’ তথ্য দিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্য বলছে, এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর এ বছরের মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

৯ দশমিক ১৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির মানে হল, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় মিলেছে, তা চলতি বছরের এপ্রিলে কিনতে খরচ করতে হয়েছে ১০৯ টাকা ১৭ পয়সা। এপ্রিলের মূল্যস্ফীতির এই হার গত ২৬ মাসের সর্বনিম্ন। মূল্যস্ফীতির হার এর চেয়ে কম ছিল সবশেষ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি অনেকটা কমার তথ্য দিয়েছিল সরকার, তবে তখন কেবল খাদ্য খাতেই কমেছিল মূল্যস্ফীতি। গত অর্থবছরের শেষ মাস তথা জুনের পর এবারই গ্রামীণ ও শহর পর্যায়ে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি একই সঙ্গে কমার তথ্য এল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকেই চড়তে থাকে মূল্যস্ফীতির হার। এরপর তা আর ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। ২০২৪ সালে আন্দোলনের মাস জুলাইয়ে তা ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে পৌঁছায়। খবর বিডিনিউজের

এ বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার এক অঙ্কের ঘরে নেমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়; ফেব্রুয়ারিতে এসে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে। মার্চে তা আবার সামান্য বাড়ার পর এবার খানিকটা কমার তথ্য দিল পরিসংখ্যান ব্যুরো। বিশ্লেষণে দেখা যায়, সার্বিক মূল্যস্ফীতি মাসের ব্যবধানে কমে যাওয়ার কারণ খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে নিম্নমুখী মূল্যস্ফীতি। শহর ও গ্রামে একই চিত্র মিলেছে। মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে ছিল তা, এপ্রিলে আরও কমে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য বহির্ভূত খাতে এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ যা মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।

শহর ও গ্রামের খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত খাতের মূল্যস্ফীতিতে খাবারের দাম কমার তথ্য দিয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। এতে দেখা যায়, এপ্রিলে শহরের খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ; যা মার্চে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর গ্রামে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি মার্চের ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ থেকে কমে এপ্রিলে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। শহরে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি মার্চের ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ থেকে কমে এপ্রিলে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর দেশের হাল ধরে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মুহাম্মদ ইউনূস মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। মুদ্রা সরবরাহে লাগাম দিতে বারবার সুদের হার বাড়ানো হয়। এতে অর্থের চাহিদা কমায় সরকারের পরিসংখ্যানেও গত চার মাস মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখিতার তথ্য মিলছে, তবে নিত্যপণ্যের বাজারে সে অর্থে সুফল দেখা যাচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুরাদপুরে অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে ২০০ কোটি টাকার সরকারি জমি দখল, দুদকের অভিযান