প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে পাঁচ হাজার রান আর মাইলফলক ম্যাচে সেঞ্চুরি। এক ম্যাচে এই দুই কীর্তি গড়ে প্রশংসায় ভাসছেন ডানহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ভারতীয় উইকেটকিপার–ব্যাটার দীনেশ কার্তিকও। মুশফিকের এমন অর্জন নিয়ে ‘দ্য আইসিসি রিভিও’ নামক অনুষ্ঠানের নতুন পর্বে দীনেশ কার্তিক বলেন, যেকোনো ব্যাটারের জন্য ৫ হাজার টেস্ট রান দারুণ অর্জন এবং সে যা অর্জন করেছে তা দুর্দান্ত। আপনি যখন পতাকাবাহী অথবা মশালবাহী কিংবা প্রথমে কিছু করেন তখন সর্বদা আপনাকে সম্মানের সঙ্গে দেখা হয়। এটি মুশফিকুর রহিমের ক্ষেত্রেও। বিশ্বের অনেক তরুণ ক্রিকেটার তাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে এবং একজন খেলোয়াড় হিসেবে তাকে সত্যিই উপভোগ করে। সে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরে ধারাবাহিকভাবে রান করেছে। সে দীর্ঘ সময় দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তার ঝুলিতে প্রাপ্তি আছে। আমার মনে হয় সে নিজেকে নিয়ে গর্বিত হতে পারে।’ মুশফিক টাইগারদের নেতৃত্বেও ছিলেন দীর্ঘদিন। একমাত্র ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি উইকেটকিপিংয়ের পাশাপাশি নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে মুশির চেয়ে এগিয়ে। মুশফিকের জন্য তাই সমবেদনা ঝরে পড়লো কার্তিকের কণ্ঠে। কার্তিক বলেন, ‘উইকেটকিপার–ব্যাটার হিসেবে ১৭ বছর ধরে খেললে শরীরের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। তাকে (মুশফিক) অবশ্যই নিজের শরীর সম্পর্কে জানতে হবে। নয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত দীর্ঘদিন ধরে খেলা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। তার রেকর্ড ঘেঁটে এবং অন্য অধিনায়কদের সঙ্গে তুলনা করলে হয়তো বুঝা যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, সে খুবই ভালো করেছে। সে ৩৪টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সাতটিতে জয় এনে দিয়েছে। দেশটি অনেক দেরিতে টেস্ট ক্রিকেটে পা রেখেছে এবং টেস্ট ম্যাচে জয় পাওয়া তাদের জন্য বড় কিছু।’ বাংলাদেশ দলের বর্তমান সাফল্যের পেছনে মুশফিকের নেতৃত্বেরও বড় ভূমিকা দেখেন কার্তিক, ‘তারা (বাংলাদেশ দল) টেস্ট ক্রিকেটে ধীরে ধীরে উন্নতি করছে এবং মুশফিকের নেতৃত্বের সময়কাল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশ এখন যেভাবে টেস্ট খেলে মুশফিককে অবশ্যই তার কৃতিত্ব দিতে হবে।’ বাংলাদেশের তীব্র গরমে খেলে গেছেন কার্তিক। এই গরমের মধ্যেই মুশফিক যেভাবে ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন, সেজন্য বিশেষ প্রশংসা করে কার্তিক বলেন, ‘বাংলাদেশের গরম একেবারেই অন্য লেভেলের। বাংলাদেশে মাঝে মাঝে প্রচন্ড তাপ অনুভূত হয় এবং অমন তীব্র গরমে উইকেট না পেলে দিনটাকে আরও দীর্ঘ মনে হয়। আমি নিশ্চিত এমন অভিজ্ঞতা তার বেশ কয়েকবার হয়েছে এবং উইকেটকিপার হওয়ায় আমিও জানি এটা কেমন লাগে।’ কার্তিক আরও বলেন, ‘আমার মনে আছে, ২০০৭ সালে আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে গিয়েছিলাম এবং আমার শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছিল। এটা আমার প্রাণরস শুষে নিচ্ছিল, আমার শক্তি শেষ হয়ে আসছিল এবং আমার প্রায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। ফলে মুশফিককে কৃতিত্ব দিতেই হবে, কারণ সে দুর্দান্ত খেলেছে এবং একজন উইকেটকিপারের জন্য এটা অনেক কঠিন কাজ।’