মীরসরাই উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে গত এক দশক ধরে। এর আগে মীরসরাইয়ে তরমুজ আসতো সুবর্ণচর বা নোয়াখালী অঞ্চল থেকে। তবে প্রতিবারের চেয়ে এবারের ফলন সবচেয়ে ভালো হওয়ায় উপজেলার ইছাখালী ও সাহেরখালী চরাঞ্চলের কৃষকরা বেশ খুশি। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মীরসরাইয়ে এবার উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার টন তরমুজ। বিক্রি শুরু হওয়ায় চাষীদের এখন বেশ আনন্দেই দিন যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে উপজেলার ইছাখালী ও সাহেরখালী অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন শতাধিক চাষী চাষ করছে সুস্বাধু গ্রীষ্মের অমৃত এই তরমুজ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরাঞ্চলের সাহেরখালী ও ইছাখালী এলাকায় গত বছর ১৯০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল। আর এ বছর চাষ হয়েছে ৪৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যাশাও অনেক বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, এবার প্রতি হেক্টরে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টন। তবে প্রত্যাশা ২০ হাজার টন নাগাদ উৎপাদন হবে এবার। যা আগামী এপ্রিল–মে নাগাদ বাজারে বিক্রি সম্ভব। উপজেলার সাহেরখালীর চরাঞ্চলের তরমুজ চাষী সাইফুল ইসলাম (৪৫) বলেন, চাষাবাদ ও বাজারজাতকরণে সুবিধা থাকায় এবং এই অঞ্চলে দোঁআশ মাটি তনমুজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। তাই তরমুজ চাষ করতে নোয়াখালী সুবর্ণচরের কৃষকরা এখানে এসে জমি বর্গা চাষ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ আবাদ করছে। আকারে অনেক বড় এবং সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এসব তরমুজের বেশ চাহিদা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এসে সরাসরি ক্ষেত থেকে এসব তরমুজ কিনে নিতে আসা শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, এখানকার তরমুজ আকারে বড়, চকচকে লাল এবং খেতে অনেক মিষ্টি হয়। এখানকার তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররাও এখানকার তরমুজ কিনে নিয়ে যান। উপজেলা কৃষি অফিসার আরো বলেন, ভিক্টর সুগার, ওশেন সুগার, গোরি, বাংলালিংক, ব্ল্যাকবেরি, স্থানীয় ও অন্যান্য জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ অব্যাহত থাকলে শত কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে এবার।