মিয়ানমারের জঙ্গলে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি

| শনিবার , ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পূর্বাঞ্চলীয় কারেন রাজ্যের জঙ্গলে একটি গোপন শিবিরে প্রস্তুতি চলছে। এ প্রস্তুতির কিছু ছবি প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে এক ফিটনেস কোচ ও অন্যান্য সাধারণ মানুষকে সশস্ত্র গেরিলাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গেছে। খবর বিডিনিউজের। থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে প্রত্যন্ত জঙ্গলে অস্থায়ী তাঁবুতে এই প্রশিক্ষণ নিতে আসা নবীনরা শিখছে কী করে রাইফেল চালাতে হয় এবং বোমায় বিস্ফোরক ব্যবহার করতে হয়। রয়টার্স কয়েকজন তরুণ-তরুণীর বিরল ছবি তুলেছে। এই তরুণ-তরুণীরা জানিয়েছে, গেরিলা যোদ্ধা হওয়ার জন্য তারা শহরের চাকরি ছেড়েছে। টি-শার্ট, রঙচঙে পোশাক ছেড়ে তারা পরেছে সেনাদের পোশাক। তাদের ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ নেওয়া হয় সেপ্টেম্বরে। জঙ্গলে প্রশিক্ষণ নেওয়া দল এবং দেশব্যাপী অন্যান্য সিভিল ডিফেন্স ফোর্স সম্পর্কে সামরিক জান্তা সরকারের মুখপাত্রের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রশিক্ষণ নিতে আসা কয়েকজন বলেছেন, তারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন। কারণ, সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ করেও নতুন শাসকদেরকে টলানো যায়নি; বরং এই শাসকরা উল্টো বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস-দমনপীড়ন চালিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩৪ বছর বয়সী সাবেক এক ফিটনেস প্রশিক্ষক বলেন, হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়াটাই এখন আমাদের জন্য একমাত্র পথ। তার সারা পিঠে আছে ট্যাটু। তাতে লেখা, নেতৃত্ব দেওয়ার স্বাধীনতা। সেইসঙ্গে আঁকা আছে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির অবয়ব। গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পরপরই সুচিকে আটক করে সেনাবাহিনী, এরপর বিক্ষোভে উস্কানি এবং করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সামরিক আদালত তাকে শাস্তিও দিয়েছে। মিয়ানমারের অন্যতম সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী ‘কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন’ (কেএনইউ) বেসামরিক নাগরিকদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এই গোষ্ঠী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে তাদের এলাকায় আশ্রয় দিয়েছে। তবে কারেন রাজ্যের জঙ্গলে গোপন প্রশিক্ষণের বিষয়ে গোষ্ঠীটি কোনও মন্তব্য করেনি। মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সেস’ এর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে দেশজুড়ে আরও এমন শত শত প্রতিরোধ গোষ্ঠী গড়ে উঠছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদত্যাগ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত
পরবর্তী নিবন্ধঅবশেষে মগের মুল্লুকে