মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী আটকদের ওপর ধারাবাহিকভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে এমন প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ তদন্তকারীরা। নির্যাতনকারীদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কমান্ডাররাও আছে বলে জানান হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। খবর বিডিনিউজের।
আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘনের প্রমাণ বিশ্লেষণে ২০১৮ সালে গঠিত জাতিসংঘের ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম) জানায়, ভুক্তভোগীরা মারধর, বৈদ্যুতিক শক থেকে শুরু করে, শ্বাসরোধ, এমনকি প্লায়ার্স দিয়ে নখ তুলে ফেলার মতো নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ১৬ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে আইআইএমএম প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান বলেন, আমরা প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব প্রমাণ পেয়েছি– এ থেকে মিয়ানমারের আটক কেন্দ্রগুলোতে ধারাবাহিক নির্যাতনের বিষয়টিই উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব নির্যাতন কখনও কখনও কারো জন্য মৃত্যুর কারণ হয়েছে। নিখোঁজ বাবা–মায়ের পরিবর্তে অবৈধভাবে আটক করা শিশুদের ওপরও নির্যাতন করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি জুন পর্যন্ত এক বছরের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। এতে ১,৩০০–র বেশি উৎস থেকে প্রাপ্ত সাক্ষ্য, ফরেনসিক প্রমাণ, নথি ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু উচ্চ পর্যায়ের কমান্ডারকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে তদন্ত চলমান থাকায় তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ওদিকে, মিয়ানমারের সেনা–সমর্থিত সরকারের মুখপাত্র নির্যাতনের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। জাতিসংঘ প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সরকারকে বহুবার নির্যাতনের এই অপরাধ সম্পর্কিত তথ্য ও দেশটিতে প্রবেশাধিকার চেয়ে অনুরোধ জানালেও কোনও জবাব মেলেনি। মিয়ানমারের সেনা–সমর্থিত সরকার বরাবরই কোনওরকম নির্যাতন চলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং অশান্তির জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করছে। জাতিসংঘ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কেবল নিরাপত্তা বাহিনী নয়, বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও সংঘর্ষে সংক্ষিপ্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। তখন থেকে দশ–হাজারের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে। গত মাসে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জরুরি অবস্থা শেষ করে নিজেকে কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন।