মিশরে সমুদ্রতলে হারিয়ে যাওয়া এক শহরের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার

| রবিবার , ২৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া উপকূলে সমুদ্রতলে চাপা পড়ে থাকা ২০০০ বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো এক শহরের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে। খবর বিডিনিউজের।

শহরটির বেশ কিছু নিদর্শন পানির নিচ থেকে তুলে আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাথাভাঙা একটি মূর্তি, চুনাপাথরের তৈরি ভবন, বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, প্রত্নবস্তু ও ডকইয়ার্ডের ধ্বংসাবশেষ। মিশর কর্তৃপক্ষ বলছে, আবু কির উপসাগরের গভীরে ডুবে থাকা এই শহরটি প্রাচীন কানোপাস নগরীর সমপ্রসারিত অংশ হয়ে থাকতে পারে। টলেমীয় শাসনামলে প্রায় ৩০০ বছর ও রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে আরও ৬০০ বছর সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত ছিল এই শহর। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আর ভূমিকম্পের কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরটি এবং পাশের বন্দর হেরাক্লিয়ন পানির নিচে তলিয়ে যায়। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, বৃহস্পতিবার উদ্ধার অভিযানে ক্রেনের মাধ্যমে সমুদ্রতল থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন ভাস্কর্য তোলা হয়। পানির নিচে কাজ করা ডুবুরিরা তীরে দাঁড়িয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রী শরিফ ফাতি বলেন, সাগরের নিচে এখনও অসংখ্য নিদর্শন রয়ে গেছে। তবে খুব নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী, কেবল কিছু জিনিসই আমরা তুলছি। বাকিগুলো আমাদের জলমগ্ন ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেই থাকবে। উদ্ধার হওয়া নিদর্শনের মধ্যে চুনাপাথরের ভবনগুলো উপাসনালয়, আবাসিক ভবন বা বাণিজ্য ও শিল্পকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও পাওয়া গেছে, জলাধার ও শিলাকাটা পুকুর, যা ঘরোয়া পানি সংরক্ষণ ও মাছ চাষে ব্যবহৃত হত। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে, রাজপরিবারের ভাস্কর্য ও রোমাপূর্ব যুগের স্ফিংস মূর্তি। তবে অনেক মূর্তিই অসম্পূর্ণ, কোনোটি মস্তকবিহীন, আবার কোনোটি আংশিক ভাঙা। যেমন: গ্রানাইট দিয়ে তৈরি এক টলেমীয় ব্যক্তিত্বের ভাস্কর্যটির মাথা নেই, আর মার্বেলে গড়া এক রোমান অভিজাতবংশীয় ব্যক্তিত্বের মূর্তির কেবল নিম্নাংশ অবশিষ্ট আছে। তাছাড়া, একটি বাণিজ্যিক জাহাজ, পাথরের নোঙর ও একটি প্রাচীন ক্রেনও উদ্ধার হয়েছে ১২৫ মিটার দীর্ঘ নোঙরঘাট থেকেযা টলেমীয় ও রোমান যুগে ছোট নৌকার জন্য ব্যবহৃত হত এবং বাইজান্টাইন আমল পর্যন্ত সচল ছিল। ইতিহাসখ্যাত অ্যালেকজান্দ্রিয়া আজ অসংখ্য প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ আর ঐতিহাসিক নিদর্শনের আধার হলেও শহরটি ঝুঁকির মুখে। জলবায়ু পরিবর্তন আর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রতি বছরই প্রায় ৩ মিলিমিটারের বেশি ডুবে যাচ্ছে উপকূলীয় এই শহরটি। জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে অ্যালেকজান্দ্রিয়ার একতৃতীয়াংশ সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাবে বা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশিয়ার ওপর আবার নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের
পরবর্তী নিবন্ধনারী বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বিসিবি