মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ নিয়ে প্রায়ই সমালোচনা উঠে আসে। এ ধরনের পিচে খেলে দেশের বাইরে সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকেই। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘লো এবং স্লো’ ধরনের উইকেট তৈরি করার জন্য মাঠ প্রস্তুতকারীদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বিশেষ করে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, মিরপুরের উইকেট একেবারেই সন্তোষজনক নয়। সমপ্রতি পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ২–১ ব্যবধানে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই জয় নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটারদের খেলতে না দেওয়ার মতো ধীরগতির পিচেই মূলত জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। তৃতীয় ম্যাচে তুলনামূলক ভালো উইকেটে খেলতে নেমেই ধরা পড়ে যায় তারা। এর আগেও মিরপুরের পিচ নিয়ে বিতর্ক ছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সাফল্যের জন্য উইকেট ধীর ও নিচু করে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল।
নাজমুল বলেন, ‘আমার মনে হয় স্পোর্টিং উইকেট বানানোর চেষ্টা ছিল, কিন্তু সেটা করতে পারেনি। যারা উইকেট তৈরি করে, দায়টা তাদেরই। বোর্ডের পক্ষ থেকে কখনোই বলা হয়নি যে উইকেট ধীরগতির ও নিচু করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো অনেকবার চেয়েছি বাউন্সি উইকেট, ভালো উইকেট।
কিন্তু দেখা গেছে, সেটা হয় না। তখন বলা হয় মাটি ভালো না, পরিবেশ উপযোগী না, কিংবা বেশি খেলা হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এসব মিলিয়ে আমাদের উইকেটটা সন্তোষজনক নয় এটা সবাই মানে। হয়তো পুরো মাটির স্তরটাই পরিবর্তন করতে হবে। অথবা পিচ তৈরির পদ্ধতিই পাল্টাতে হবে। আশা করি সামনে এই জায়গায় পরিবর্তন আসবে।’ সমপ্রতি বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামও মন্তব্য করেছিলেন, মিরপুরের পিচে ব্যবহৃত কালো মাটির কারণে ব্যাটাররা বল দেখতে কষ্ট পান। একই মন্তব্য করেন নাজমুল। তিনি বলেন, ‘যদি উইকেটে ঘাস থাকত, তাহলে বলের রং এত তাড়াতাড়ি নষ্ট হতো না। ঘাস না থাকায় বল মাটির সঙ্গে ঘর্ষণে কালচে হয়ে যায়। একপর্যায়ে সাদা বলটা আর তেমন দেখা যায় না। সেটাই ব্যাটারদের জন্য সমস্যা তৈরি করে।
আমাদের বোর্ড সভাপতির মন্তব্যটা একদম ঠিক।’ এদিকে চট্টগ্রামে চলমান ‘এ’ দল ও হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের মধ্যকার টি–টোয়েন্টি সিরিজটিও বিসিবির কড়া নজরে রয়েছে আসন্ন এশিয়া কাপ সামনে রেখেই। নাজমুল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই সিরিজে এমন খেলোয়াড় আছেন, যাদের এশিয়া কাপে খেলার সম্ভাবনা আছে। যদিও সেটা নির্ভর করবে নির্বাচকদের ওপর। হয়তো এক–দুজন সুযোগ পেতে পারেন। তবে আমরা মূলত ভবিষ্যতের খেলোয়াড়দের দেখছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই এখান থেকে এমন খেলোয়াড় উঠে আসুক, যারা জাতীয় দলে ঢুকে দলের শক্তি বাড়াবে। সময়টা কাছাকাছি, তাই কেউ ব্যতিক্রম কিছু করলে সেটা নির্বাচকদের চোখে পড়বেই। এই মুহূর্তে হয়তো জাতীয় দলের কাঠামো মোটামুটি ঠিক করা আছে, তবে ‘এ’ দলের কারও ভালো পারফরম্যান্স নজরে এলে তাকে নিয়েও ভাবা হতে পারে।’ এবারের এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ রয়েছে হংকং, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে। টুর্নামেন্টটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে।