স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবির ফোর্স বাড়ানো হয়েছে, কোস্টগার্ড সজাগ রয়েছে, আমাদের নৌবাহিনীও সেখানে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছে। কাজেই ওখান থেকে কেউ অস্ত্র নিয়ে ঢুকবে সেই অবস্থা নেই। গতকাল শুক্রবার বিকালে নগরীর দুই নম্বর গেটে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় দুই চারটি অস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো হয়তো আরাকান আর্মি নিয়ে আসছিল। তাদের হয়তো কোনো মোটিভ থাকতে পারে। তবে সবই ধরা পড়ছে। বিজিবি সবাইকে আটক করেছে। কঠোর অবস্থানে রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, শুধু আরাকান আর্মি নয় তাদের অনেক গ্রুপ তৈরি হয়েছে; যারা যুদ্ধে লিপ্ত আছে। আরাকান আর্মি বেশ কিছুদিন ধরেই আমাদের এই অঞ্চলে যুদ্ধ করছে। এই অঞ্চলে যুদ্ধ করলে আমাদের এখানে কিছু গোলাগুলির শব্দ আসছে সেটি যেমন সত্য, তেমনি সরকারি বাহিনী বিজিপি এবং অন্যান্য সরকারি লোকজন ভয়ে আত্মরক্ষার্থে আমাদের দেশে পালিয়ে আসছিল সেটিও আপনারা দেখেছেন। আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির একটিই কথা ছিল যে, আমাদের ফ্রেন্ডশিপ উইথ অল মেলাইস উইথ নান। আমরা সেই নীতি অবলম্বন করছি। তারা যতই গোলাগুলি করুক আমরা প্রতিবাদ করছি। আমরা তাদেরকে আমাদের এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছি না।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের বিষয়ে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা কি জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পার্টি থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে জাতীয় নির্বাচন ছাড়া অন্য নির্বাচনে আমরা নৌকা প্রতীক আর ব্যবহার করব না। সব নির্বাচনে আমাদের ডিরেকশন এটাই যেহেতু নৌকা প্রতীক থাকবে না, যার যার প্রতীক নিয়ে ফাইট করবে। কে কতখানি জনপ্রিয় সেটাই প্রমাণ হবে। আমরা মনে করি জনপ্রিয় লোকগুলো নির্বাচনে আসুক। জনপ্রিয় লোকগুলো নির্বাচনে আসলে তাদের এলাকা ডেভলপ করতে তারা বাধ্য হবে এবং করবে। আর জাতীয় নির্বাচন যেভাবে হয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের আইনশৃক্সখলা বাহিনী আরো সুন্দর একটা নির্বাচন উপহার দেওয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলবে।
জেল থেকে বেরিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সরকার উৎখাতের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা তো অনেক কথাই বলে। এদেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখান করেছে। আমি সবসময় বলি আপনারা ধারাবাহিকভাবে যদি দেখেন, ২০০১ এরপরে ২০০৮ এ তারা কতগুলো সিট পেয়েছে? ৩০টা সিট পেয়েছে। এরপর ২০১৪তে তারা বয়কট করলো। ২০১৮তে তারা ৬টি সিট পেয়েছে। এবং তারা সুনিশ্চিত যে তারা যদি কোনো ষড়যন্ত্র না করতে পারে কিংবা তাদের বিদেশি প্রভুরা যদি ইন্টারফেয়ার না করতে পারে তাহলে তারা নির্বাচনে জিতবে না। এটা তারা জানতেন। সেজন্যই তারা এবারও নির্বাচনে আসেননি। তাদের কথা শুনে এদেশের মানুষ হাসে। এদেশের মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এটা যেমন সত্য; তারা যেসব প্রোগ্রাম দেয়, মানুষ এগুলো নিয়ে হাসাহাসি করা ছাড়া আর কিছু করে না।
ড. ইউনূস বলেছেন মিরপুরে ১৪ তলা ভবনে কয়েকটি দপ্তর সরকার জবরদখল করেছে, তিনি আইনি সহায়তা চেয়েও পাননি – এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আইনের বাইরে আমরা কিছু করছি না। ড. ইউনূসের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আদালতের। আদালতের নির্দেশনা যেভাবে এসেছে সেভাবেই কাজ হচ্ছে। এর বাইরে সরকার বা পুলিশ কেউ কিছু করছে না।
এ সময় সিএমপি পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।