মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | রবিবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজানুল মোবারক শুভ আগমন হলে প্রতিটি রোজার জন্য আমরা সুবেহ সাদেকের আগেই সেহেরি খাওয়া শেষ করি। সেহেরি খাওয়া সুন্নাত। এতে সওয়াব রয়েছে। এর দ্বারা রোজা রাখার কষ্ট কম হয়। রোজাকে উৎসাহিত করে। রোজায় ক্লান্তি আসে না। মন সবল থাকে। সেহেরির সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। এ সময় দোয়া কবুল হয়। এই সময়ের দোয়া, জিকির তজবিহ, তাহলিল, ইসতিগফার আল্লাহ পাকের নিকট অধিক পছন্দনীয়।
মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল্লামের জীবনের প্রথম পর্যায়ে সেহেরির প্রচলন ছিল না। তাঁর প্রিয় সাহাবী হযরত সারমাহ ইবনে কায়স গানাভী (রা.)’র একদিন রাত্রে অনাহার অবস্থায় নিদ্রা আসে। ফলে তাঁকে উপোস রোজা রাখতে হয়। রোজা অবস্থায় তিনি যখন কাজ করতে যান তখন বেহুঁশ হয়ে মাঠে পড়ে যান। এ ঘটনার পরই মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেহেরি খাওয়ার অনুমতি দেন এবং তিনি নিজেও সেহেরি খেতেন। তাই সেহেরি খাওয়া মুসলমানের জন্য সওয়াবের কাজ।
সবচেয়ে বড় কথা সেহেরি খাওয়ার মাধ্যমে হযরত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করা হয়। আর সকল ইবাদতের মর্মবাণীই হলো রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহম্মদ মোস্তফা আহমদ মুজতবা সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ। তিবরানী শরীফে বর্ণনা আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ পাক ও তাঁর ফেরেশতাগণ সেহেরি গ্রহণকারীদের জন্য রহমত ও করুণা বর্ষণ করেন।
হযরত ইররাজ বিন সারীয়া (রা.) বলেন, একদা রমজানে হযরত রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সেহেরি খেতে ডাকলেন এবং বললেন, এসো এই পবিত্র আহারের দিকে। (আবু দাউদ ও নাসায়ী শরীফ)।
মুসলমানদের মনে রাখা উচিত উদরপূর্ণ করে খাওয়া হযরত রাসুল করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত নয়। সেহেরি খাওয়ার সময়ও তাই সুন্নাত রীতি অনুসরণ করা উচিত। একভাগ আহার, একভাগ পানি আর এক ভাগ খালি রাখতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র ইরশাদ করেছেন। বিলম্বে সেহেরি খাওয়া মোস্তাহাব। তার অর্থ এই নয় যে, সেহেরির সময়সীমা অতিক্রান্ত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
পরবর্তী নিবন্ধফের রক্তাক্ত গন্ডামারা