লরিচাপায় ৯ মাস বয়সী শিশু সন্তানসহ এক বাবার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে নগরীতে। তবে নিজের মৃত্যুর আগে চার বছর বয়সী অপর ছেলেকে বাঁচিয়ে গেছেন বাবা আবু সালেহ। রিকশার চাকা ভেঙে লরির চাকার নিচে পড়ন্ত অবস্থায় বড় ছেলেকে ছুড়ে মারেন তিনি। আর এতে করে কিছুটা আহত হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যায় বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহিদ। এ তথ্য জানিয়েছেন নিহত আবু সালেহ’র স্ত্রী মনিরা আক্তার। তিনিও একই রিকশার আরোহী ছিলেন। তবে অলৌকিকভাবে বড় ছেলের সঙ্গে তিনিও প্রাণে বেঁচে গেছেন। যদিও স্বামী ও ৯ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে ঘটনাস্থলেই হারিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর গতকাল বিকালে স্বামী ও শিশু সন্তানের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আনা হয়। স্বামী-সন্তানের শোকে অনেকটা শোক ভুলে যাওয়া এই গৃহবধূ অ্যাম্বুলেন্সে বসেই কথা বলছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আবু সালেহ’র বড় বোন আফরোজা বেগম।
মনিরা আক্তার জানান, রিকশা থেকে পড়ে যাওয়ার সময় আমার স্বামী বড় ছেলেকে ছুড়ে মারে। ছেলেকে ছুড়ে দিয়েই উনি রাস্তায় পড়ে যান। ছোট ছেলেটিও পড়ে যায়। বড় ছেলেকে ছুড়ে না মারলে তাকেও হয়তো হারাতে হতো।
মনিরা ও আফরোজার সঙ্গে আলাপে জানা যায়, আবু সালেহ একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তবে গতকালর কাজে যাননি। পরে সবাই মিলে ঈদের কেনাকাটা করতে মার্কেটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাসা থেকে বের হয়ে কেনাকাটার জন্য প্রথমে ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলেন আবু সালেহ। এরপর রিকশায় চেপে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে নিয়ে মার্কেটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে শাহ মার্কেটের সামনে আসতেই মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। নিমিষেই তছনছ হয়ে যায় একটি সাজানো সংসার। দুর্ঘটনার পর গাড়ির মালিকের পক্ষ থেকে লোক এসেছিল জানিয়ে মনিরা জানান, তারা অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া দিয়েছে। দুদিন পর আবার যোগাযোগ করবে বলে জানিয়ে গেছে।
অবশ্য, এ ঘটনায় পরে ইপিজেড থানায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় লরি চালক কবির আহমদ শেখকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।.