মালয়েশিয়ায় দুই লাখ বাংলাদেশির বৈধ হওয়ার সুযোগ

| শনিবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের বৈধ করার প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া লেবার রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রাম নতুন করে শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি থেকে। এটা চলবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য থাকে দেশটিতে বিভিন্ন খাতে কাজ করা অবৈধ শ্রমিকদের যাতে তাদের মালিকরা বৈধভাবে নিয়োগ দিতে পারে। কোন কোন খাতে আর কোন কোন দেশের শ্রমিকরা এই সুবিধা নিতে পারবেন মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ তা নির্দিষ্ট করে দেয়নি। এই তালিকায় বরাবর শীর্ষের দিকে থাকে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার সরকার জানিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামে নিবন্ধন করেছে ৪ লাখের বেশি শ্রমিক। জানা যায়, বাংলাদেশি ও ইন্দোনেশিয়ার শ্রমিকেরা এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।

ইমিগ্রেশন বিভাগের হিসাব বলছে, এ বছরের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৭৭ জন বিদেশি কর্মীকে অস্থায়ী কাজের ভিজিট পাস দিয়েছে তারা। এর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৪৬, ২২৯ জন। যখন মালয়েশিয়ার সরকার অনথিভুক্ত বিদেশি কর্মীদের নথিভুক্ত করার বিভিন্ন প্রক্রিয়া ঘোষণা করে তখন সর্বাধিক আগ্রহ দেখায় ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মীরা। তারা বৈধভাবে থাকার জন্য বেশি আগ্রহী। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে কতজন বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিক রয়েছেন তার নির্দিষ্ট কোনো হিসেব নেই। তবে দুই থেকে আড়াই লাখের বেশি অনথিভুক্ত বাংলাদেশি রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

কোন প্রক্রিয়ায় হবে : কালো তালিকাভুক্ত অর্থাৎ যার বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশনে অভিযোগ রয়েছে এমন শ্রমিক এবং ক্রিমিনাল রেকর্ড রয়েছে এমন অভিবাসী ছাড়া যে কেউ এই লেবার রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবে। যে আটটি খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো উৎপাদন, নির্মাণ, খনি ও খনন, নিরাপত্তা রক্ষী, সেবা, কৃষি, বাগান ও গৃহকর্মী। এ সমস্ত কাজের জন্য ১৫টি সোর্স কান্ট্রির কথা উল্লেখ করেছে মালয়েশিয়া, যার অন্যতম বাংলাদেশ। বৈধতার ক্ষেত্রে কর্মীর বয়স ১৮ থেকে ৪৯ বছর হতে হবে।

মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক নিউ স্ট্রেইট টাইমস দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেছে, এই প্রোগ্রাম সেইসব বিদেশি কর্মীর জন্য যারা এরই মধ্যে এখানে কাজ করছে, কিন্তু সঠিক কাগজপত্র নেই। তারা এখন পেমেন্ট করে এই সুবিধা নিয়ে বৈধভাবে কাজ করতে পারে অথবা দেশে ফেরত যেতে পারে।

মূলত নিয়োগকর্তারা লেবার রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রাম (আরটিকে) .০’এর মাধ্যমে বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন শুরু করেছেন। ইমিগ্রেশন বিভাগ থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ পাওয়ার আগে যঃঃঢ়ং://রসরমৎবংবহ ড়হষরহব.রসর.মড়া.সু/সুরসসং/সধরহঅনলাইনেও আবেদন করতে পারবেন। অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ হতে মাত্র একদিন সময় লাগবে। এরপর হবে বিদেশি কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, যা পরিচালনা করবে ফরেন ওয়ার্কার্স মেডিক্যাল এঙামিনেশন মনিটরিং এজেন্সি।

পরবর্তী প্রক্রিয়া হবে রিক্যালিব্রেশন ফি, ভিসা, অস্থায়ী কাজের ভিজিট পাস (পিএলকেস), প্রক্রিয়াকরণ ফি এবং শুল্ক প্রদান। যখন সমস্ত নথি সম্পূর্ণ হয়, নিয়োগকর্তারা পিএলকেস বা কাজের অনুমতিপত্র ইস্যু করেন।

কত খরচ পড়বে : এই প্রোগ্রামে সর্বনিম্ন ফি ধরা হয়েছে ১৫০০ রিঙ্গিত, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার টাকা। এর সাথে মেডিকেল ও অন্যান্য ফি মিলিয়ে মোট খরচ হয় তিন হাজার রিঙ্গিতের ওপর। ইমিগ্রেশন বিভাগ বলছে, গত বছরের মতো এবারও তারা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে এজেন্ট বা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিয়োগ করেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমারে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জান্তা সরকারের নতুন বিধি
পরবর্তী নিবন্ধ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্য